নাহিদ বিন রফিক, বরিশাল: দেশের দক্ষিণাঞ্চল সফরের অংশ হিসেবে শুক্রবার (৪ আগস্ট) আগস্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. গোলাম মারুফ ঝালকাঠি সদরের শিরজুগ গ্রামের এক দৃষ্টিনন্দন থাই পেয়ারা বাগান পরিদর্শন করেন। তিনি পুরো বাগান ঘুরে দেখে অভিভূত হন।
এ সময় বাগানের অংশিদার মো. কামাল হোসেন জানান, নাটোরের পেয়ারা চাষি আতিকুর রহমানের কাছ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে চার বন্ধু মিলে গত বছর ২৫ একর জমিতে দু’টি বাগান স্থাপন করেন। চারা রোপণের নয় মাস পর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচশ’ মণ পেয়ারা বিক্রি করেছেন, যার মূল্য প্রায় ষোল লাখ টাকা। তিনি আরো বলেন, এখানকার উৎপাদিত স্থানীয় জাতের পেয়ারার বাজারমূল্য অনেক কম। যেহেতু এ অঞ্চল পেয়ারার জন্য বিখ্যাত। তাই থাই পেয়ারা চাষ করে কোটিপতি হওয়া সম্ভব।
তাদের অভাবনীয় এ সাফল্যে দেখে আশেপাশে নতুন নতুন বাগান সৃষ্টি হচ্ছে। মহাপরিচালক একই উপজেলার বেশাইন খান গ্রামে সর্জন পদ্ধতিতে স্থাপিত একশ’ আশিটি খাটো জাতের একটি নারিকেল বাগান পরিদর্শন শেষে জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। এর আগে তিনি গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে চাষি পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম, পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আউশ ধান প্রদর্শনীর ওপর এক কৃষক মাঠদিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আউশ ধান আবাদে অনেক সুবিধা। খুব একটা সেচ লাগে না। বৃষ্টির পানিতেই তা পূরণ হয়ে যায়। আগে যেখানে স্থানীয় জাতের বীজ থেকে বিঘাপ্রতি ৩/৪ মণের বেশি উৎপাদন হতো না। এখন উফশী জাত ব্যবহার করে সেখানে ১২ থেকে ১৫ মণ ফলন পাওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, টাকা-পয়সা দিয়ে আপনাদের সাহায্য করার সুযোগ হয়তো নেই। তবে কোন কাজটি কিভাবে করলে বেশি লাভবান হবেন সে বিষয়ে সহায়তা করতে পারব। আমরা দেব পরামর্শ আর আপনারা করবেন বাস্তবায়ন। এভাবেই সবার অংশগ্রহণে দেশ এগিয়ে যাবে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিচালক (সরেজমিন উইং) চৈতন্য কুমার দাস এবং বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওমর আলী শেখ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপপরিচালক শেখ আবু বকর সিদ্দিক, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার শ্যামল কুমার দাস, আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক তুষার কান্তি সমদ্দার, সদরের উপজেলা কৃষি অফিসার মো. তাজুল ইসলাম, নলছিটির উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সাইদুর রহমান, আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে তিনি কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরণ করেন। এর আগে ডিজি নলছিটি উপজেলার প্রতাব গ্রামে আমন ধানের ভাসমান বীজতলা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন। পরে খামারবাড়িস্থ ডিএই সম্মেলন কক্ষে কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।