ডেস্ক রিপোর্ট : পান খেয়ে ঠোঁট লাল করার যুগ হয়তো এখন আর নেই, কিন্তু পান এর কদর কিন্তু দিনদিন বাড়ছে বই কমছে না। আগে যে পান নানি-দাদির মুখে শোভা পেত এখন তা অনেকেই চেখে দেখছেন শখ করে। পানের অন্যতম একটি অনুসঙ্গ হচ্ছে সুপারি। কেউ কেউ আবার কাঁচা সুপারি শখ করেও খেয়ে থাকেন। তবে সুপারি সম্পর্কে ভয়াবহ তথ্য দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা এজেন্সী সংক্ষেপে যেটি আইএআরসি নামে পরিচিত।
সংস্থাটি’র মতে সুপারি ও পান এক ধরনের কার্সিনোজেন (বিষ) যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সুপারি সহ পান খেলে মুখের ক্যন্সার হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে সুপারি দিয়ে পান খেলে মুখের ক্যান্সারের ঝুকি ৯.৯ গুন (জর্দা সহ) এবং ৮.৪ গুন ( জর্দা ছাড়া)। পানে রয়েছে টারফেনলস। পান খাওয়ার কারণে ঠোঁট ও জিহ্বাতে দাগ পড়ে যায়। দাঁতে প্রায় স্থায়ী দাগ পড়ে যায়। চুনে রয়েছে প্যারা অ্যালোন ফেনল যা মুখে আলসার সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের ঘা ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে।
তাইওয়ানে গবেষণায় দেখা গেছে, সুপারি নিজেও ক্যান্সার সৃষ্টি করে থাকে অর্থাৎ সুপারি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান। সুপারি চুনের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটিয়ে এরিকোলিন নামক একটি নারকোটিক এলকালয়েড উৎপন্ন করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এরিকোলিন প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এ কারণেই চোখের মণি সংকুচিত হয় এবং লালার নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, চোখে পানি পর্যন্ত আসতে পারে।
কাঁচা সুপারি চিবালে উত্তেজক হিসেবে কাজ করে। সুপারিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার সাইকোএকটিভ এলকালয়েড। এ কারণেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কাঁচা সুপারি চিবালে শরীরে গরম অনুভূত হয়, এমনকি শরীর ঘামিয়ে যেতে পারে। সুপারি খেলে তাৎক্ষণিক যেসব সমস্যা দেখা যায় সেগুলো হল- অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে। হাইপারটেনশন বা রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। টেকিকার্ডিয়া বা নাড়ির স্পন্দনের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে অস্থিরতা অনুভূত হওয়া।
দীর্ঘমেয়াদে সুপারি সেবন করলে ওরাল সাবমিউকাস ফাইব্রোসিস হতে পারে। ক্যান্সারের পূর্বাবস্থা বা স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা হতে পারে। আমাদের দেশে মুখের ক্যান্সারের মধ্যে স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা বেশি হতে দেখা যায়।
এছাড়াও পানের সঙ্গে সাদাপাতা বা জর্দা ব্যাপকভাবে গৃহীত হচ্ছে। ক্যান্সার গবেষণায় আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএআরসি-এর মতে, যারা পানের সঙ্গে তামাকজাতীয় দ্রব্যাদি গ্রহণ করেন তাদের সাধারণের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ওরাল ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।