বৃহস্পতিবার , ডিসেম্বর ২৬ ২০২৪

লিপস্টিক ট্রি দইগোটা

lipstick treeজাহাঙ্গীর আলম শাহ্ : ব্রাজিলের একটি গাছের নাম দইগোটা। ভারত, ব্রাজীল, কেনিয়া এবং পেরুতে এর চাষ হয়। চাষ না হলেও গাছটি আমদের দেশে যত্রতত্র পাওয়া যায়।

দই গোটার বৈজ্ঞানিক নাম বিক্সা ওরেলানা (Bixa Orallana) হিন্দিতে লটকন বাংলায় সিন্দুর বা লটকা নামে পরিচিত হলেও দইগোটা নামটির ব্যবহারই বেশি। ইংরেজি “লিপস্টিক ট্রি” নামটি খুবই জনপ্রিয়। স্প্যানিশ বা পর্তুগিজরা এই গাছ ভারতবর্ষে এনেছে বলে অনুমান করা হয়। ভারতে দইগোটার প্রজাতিটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আনা হয়েছে বলে জানা যায়। মৌমাছির মাধ্যমে এর পরাগায়ন ঘটে।

দইগোটার বীজ দিয়ে ঠোট, পোষাক এবং খাবার রাঙানো হয়ে থাকে। এছাড়া এই গাছ থেকে নানা রকম ওষুধও তৈরি হয়। এই রং প্রাকৃতিক তাই পরিবেশবান্ধর, ফলে স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হয়না। দইগোটা বীজের ত্বক থেকেই এই রং তৈরি হয়। ব্রাজিলের লোকেরা এটা দিয়ে ঠোট শরীর রং করে। এতে মোমজাতীয় পদার্থ থাকায় ঠোট রং করলে তা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী থাকে, রং ছড়িয়ে যায়না, রংটি চকচকে এবং ম্যাট ম্যাটের মাঝামাঝি হয়। এই  ফল লাল ও সাদা দুই ধরনের হয়। লাল রঙ্গের ফল থেকে লাল রং তৈরি হয় এবং সাদা রঙের ভেতরের বীজ হলদেটে হয় যা থেকে হলুদ রং পাওয়া যায়। এই রং দিয়ে ওষুধ  হিসাবে জ্বর, এ্যাজমা, সাইনাস, রক্তপাত, আমাশয়, আগুনে পোড়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়।

লিপস্টিক, নখ পালিশ, বেত, কাঠ বা বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র রং করার জন্য এটি খুব উপযোগী। পানি, খাদ্য-বস্তু রঙিন ও মৃদু-সুগন্ধি করা  ছাড়াও মাখন, কাস্টার্ড, কেক এগুলোতেও দইগোটা বীজের রং ব্যবহার করা হয়, যা স্বাস্থ্যবান্ধব। গাছটি ২০ ফুটের মতো লম্বা হয় এবং দুই বছর বয়স থেকেই ফলন শুরু হয়ে গাছটি পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত বাঁচে। যে কোন মাটিতেই দইগোটা গাছ জন্মাতে পারে। এমনকি উঁচু পাহাড়েও। তবে লোনা মাটিতে দইগোটা ভালো হয়না। এছাড়াও এই গাছ ছায়ায় পড়লে গাছের আয়ু কমে এবং ফলনও কমে যায়। অর্গানিক পরিবেশবান্ধব এই দইগোটার গাছ বাংলাদেশর বিভিন্ন শহরে শ্রীবৃদ্ধি, ল্যান্ডস্কেপিংয়ের কাজেও লাগানো যেতে পারে।

প্রতিষ্ঠাতা : শাহ্ কৃষি পাঠাগার, নওগাঁ।

This post has already been read 4631 times!

Check Also

আমন ধানে ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার আক্রমণ: ফলনের ক্ষতি ও করণীয়

ড. মো. মাহফুজ আলম: বাংলাদেশে ধান প্রধান ফসল হিসেবে পরিচিত এবং এর উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির …