– বাকৃবির ৫৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী
মো. আরিফুল ইসলাম (বাকৃবি):
এক সময় এ দেশের মানুষ খাবারের অভাবে কষ্ট পেত। বর্তমানে দেশের মানুষ দ্বিগুণ হয়েছে তবুও আর খাদ্যের অভাব নেই। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনের পেছনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে অপরিসীম অবদান। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা নিরলসভাবে দেশের কৃষির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের কৃষিকে আরও সমৃদ্ধ করতে হলে নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কোর্স কারিক্যুলামকে আরও আধুনিক করতে হবে। বর্তমান সরকার শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তরিক। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পর জাকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করা হয় প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস ছিল ১৮ আগষ্ট। শোকের মাস আগষ্টে প্রতিষ্ঠা দিবস হওয়ায় দিবসটি বর্ণাঢ্যভাবে এবার ৭ অক্টোবর পালনে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঈদ, দুর্গাপূজার ছুটি শেষে গতকাল শনিবার নানান আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ মরণ সাগরের পাশে হ্যালি পেডে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা এবং বেলুন উড়িয়ে দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে হ্যালিপ্যাড থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই মিলনায়তনে কৃষি শিক্ষায় বাকৃবির অবদান শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া ১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের সাংসদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাকৃাবি অ্যালামনাই এসোসিয়েশনে নিবার্হী সম্পাদক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা, নির্বাহী সভাপতি কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান ও বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল আলম। এর আগে অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন। আরও বক্তব্য রাখেন বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সবুজ কাজী এবং সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রুবেল। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খান।
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন ও সম্মুখ ভাবনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মন্ডল।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কৃষক সমাবেশ এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রদর্শনী করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদের স্টল প্রদর্শনী করা হয়। পরে শিক্ষামন্ত্রী ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ স্টলগুলো ঘুরে দেখেন। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের যৌথ আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের ব্যানার, ফেস্টুন টানানো হয়েছে। ক্যাম্পাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।