নিজস্ব প্রতিবেদক : পোলট্রি শিল্পে কক্সসিডিওসিস মারাত্মক এক সমস্যা। পোলট্রি শিল্পে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় শুধু মাত্র এই একটি রোগে। খামারকে লাভজনক করতে হলে এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার বিকল্প নেই। তাছাড়া পোলট্রি শিল্পে নতুন নতুন রোগবালাইসহ সমস্যা আসছে এবং ভবিষ্যতেও আসবে। তাই এসব বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। খামারি ভাইদের উচিত সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া এবং তার খামারের জন্য সঠিক পণ্যটি সংগ্রহ করা।
বেলজিয়াম ভিত্তিক কোম্পানি ইমপেক্সট্রাকো (Impextraco) এবং পোলট্রি সেক্টরে দেশের স্বনামধন্য প্লানেট ফার্মা লিমিটেড (Planet Pharma Ltd.) যৌথভাবে আয়োজিত “Latest Trends & Management of Coccidiosis”-শীর্ষক সেমিনারে উপরোক্ত কথাগুলো বলছিলেন প্লানেট ফার্মা লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ্ হাবিবুল হক। এ সময় তিনি সেমিনারে আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁদের পণ্য সম্পর্কে আরো বেশি জানার আগ্রহ থাকলে প্লানেট অফিসে ভিজিট করার আহ্বান জানান।
প্লানেট ফার্মার এইচআর এবং কমার্শিয়াল বিভাগের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ জিএম শোয়াইব আদনান -এর উপস্থাপনায় সেমিনারটি শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর এক হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে পোলট্রি শিল্পের সাথে জড়িত বিভিন্ন পেশাজীবী, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ, কোম্পানি প্রতিনিধি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন Impextraco- এর Managing Director (Asia Pacific) Mr. Dave Munro, Technical and marketing Manager Dr. Anuruddha Jayatillake, প্লানেট ফার্মার পরিচালক শাহ্ ফাহাদ হাবিব, মো. মোসলেহ উদ্দিন সহ প্লানেট ফার্মার বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সেমিনারের শুরুতে Impextraco -এর গ্লোবাল বিজনেস ডিরেক্টর Ms. Katrien Deschepper ইমপেক্সট্রাকো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। ব্যবসার ক্ষেত্রে পারিবারিক ঐতিহ্য এবং গুণগত মানকে প্রাধান্য দেন বলে জানান । বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে তাদের ব্যবসা রয়েছে বলে জানান এ সময় তিনি।
“Findings of Coccidiosis in Different Context of Bangladesh”-শীর্ষক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট পোলট্রি কনসালট্যান্ট ড. বিধান চন্দ্র দাস। এ সময় তিনি ওসঢ়বীঃৎধপড় থেকে আমদানিকৃত পণ্যগুলোর ফিল্ড ট্রায়াল তথ্য, দেশে কক্সিডিওসিস এর ঝুঁকি, করণীয় ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করেন। এ সময় তিনি কক্সিডিওসিস নিরাময় ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পোলট্রির ভালো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, কেমোথেরাপী (কক্সিডিওসিস) এবং টিকাদান কর্মসূচির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে VET WORKS -এর Consultant Dr. Hannes Mathias কী নোট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বলেন মূলত ৪টি বিষয়ের ওপর কক্সিডিওসিস নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করে। এগুলো হলো- ১. দীর্ঘ সময় ধরে একই ধরনের এন্টিকক্সিডিয়াল ব্যবহার না করা; ২. একটি পণ্য ব্যবহার করার পর দীর্ঘ সময় বিশ্রাম দেয়া। ৩. বছরে অন্তত একবার কেমিক্যাল ক্লিনআপ করা এবং ৪. বছরে একবার ভ্যাকসিনেশন করা।
Impextraco – থেকে আমদানিকৃত পণ্যগুলোর বাজারজাতকরণ এবং বৈশিষ্ট সম্পর্কে প্লানেট ফার্মার পরিচালক শাহ্ ফাহাদ হাবিব এগ্রিনিউজকে বলেন, Impextraco-এর সাথে আমরা ব্যবসা শুরু করি ২০১৩ সন থেকে। তাদের এন্টিকক্সিডিওয়াল পণ্যগুলো আমরা বাজারজাত শুরু করছি। প্রথমে ৬টি পণ্য নিয়ে তাদের সাথে আমরা ব্যবসা শুরু করি এবং এ বছর আরো ৩টি পণ্য যোগ করি। আমরা খুবই আশাবাদী এবং সন্তুষ্ট এসব পণ্য বাজারজাতকরণে। কারণ, আমাদের দেশের বড় বড় ফিডমিলগুলোর মোটামুটি বেশিরভাগই Impextraco – থেকে আমাদের আমদানিকৃত পণ্য সম্পর্কে পরিচিত এবং তারা এসব এন্টিকক্সিডিওয়াল পণ্য ব্যবহার করছেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের আজকের প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য ছিল কক্সিডিওসিস কীভাবে কখন, কোন সময়ের জন্য ব্যবহার করা হবে এসব বিষয় নিয়ে পুরো বছরের একটি পরিকল্পনা সবার সামনে উপস্থাপন করা। তাছাড়া আমরা চেষ্টা করছি দেশে এন্টিবায়োটিক ফ্রি ফিড উৎপাদনে প্লানেট ফার্মা যাতে একটি সুনির্দিষ্ট অবস্থান রাখতে পারে। কারণ আগামীতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। আমরা এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করতে চাই। কারণ সবার আগে মানব স্বাস্থ্য।
এ সময় তিনি খামারে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার জন্য দেখে শুনে এবং খোঁজ খবর নিয়ে ভালো মানের এন্টিকক্সিডিওয়াল ব্যবহার করার অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, প্লানেট ফার্মা লিমিটেড Impextraco থেকে আমদানিকৃত SALIGRAN (Xtra-salinomycin), MONSIGRAN (Xtra-Monensin), MADIMPEX (Xtra-Maduramycin), MNGROW (Xtra-Nicerbazin+Maduramycin), ROBIMPEX (Xtra Robenidine), LERBEK (Xtra-Clopidol+MBQ), DOTIMPEX (X-tra Dinitolmide), METICLORPINDOL (X-tra clopidol), DECOPEX (X-tra Decoquinate) নামে মোট ৯টি পণ্য বাজারজাত করছে।