নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে বাংলাদেশে ৪.৯৬ লক্ষ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। হেক্টরপ্রতি আলুর গড় ফলন ২০.৭৭ মেট্রিক টন। আলু চাষে নাইট্রোজেন প্রধান পুষ্টি উপাদান হিসেবে ব্যবত হয়। আলু চাষীরা নাইট্রোজেনের উৎস হিসেবে ইউরিয়া ব্যবহার করেন। তাই ক্রমাগত ইউরিয়ার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি বছর প্রায় ১০-১৫ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়।
বর্তমানে ইউরিয়া সারের পিছনে বিপুল পরিমান ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে চাষীরা ‘নেব’ নামক এক ধরনের মূলের নির্যাস ব্যবহার করছেন যাতে ১৭ ভাগ ফালভিক এসিড রয়েছে যা মাটির অণুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে শতকরা ৫০ ভাগ পর্যন্ত নাইট্রোজেন অর্থ্যাৎ ইউরিয়ার ব্যবহারে এবং খরচ কমে যাবে অর্ধেক। নেব উদ্ভিদের রাইজোস্ফেয়ারে বিদ্যমান উপকারী অণুজীব ওছত্রাকসমূহ সক্রিয় করে। অণুজীবসমুহ ইমমোবিলাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নাইট্রোজেনকে নিজেদের দেহে সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে অণুজীব সমূহ মারা গেলে মিনারেলাইজেশান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জৈব নাইট্রোজেন ভেঙ্গে দ্ভিদের গ্রহণযোগ্য রূপে পরিণত হয়, যা পর্যায়ক্রমে উদ্ভিদ গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সিটিটিউট (মুন্সিগঞ্জ) তাদের এক মাঠগবেষণা থেকে জানায় যে সকল জমিতে নেব ব্যবহার করে আলু চাষ করা হয়েছে সেগুলোয় হেক্টরপ্রতি ফলন হয়েছে গড়ে ৩২.১০ মেট্রিক টন। অন্যদিকে ইউরিয়া ব্যবহৃত জমিতে হেক্টরপ্রতি ফলনের পরিমাণ গড়ে ৩০.৩০ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে মুন্সিগঞ্জ এলাকার অনেকে কৃষক নেব ব্যবহার করছেন। তাদের অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নেব ব্যবহারের কারণে হেক্টরপ্রতি গড়ে১৫০০ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। তাঁরা আরো বলেন, হেক্টরপ্রতি ৩৮০ কেজি ইউরিয়া ব্যবহারের পরিবর্তে নেব ব্যবহারের কারণে এখন ১৯০ কেজি করে ইউরিয়া ব্যবহার করছেন।
প্রসঙ্গত, বাজার ঘুরে দেখা গেছে নেব আমেরিকার একটি পণ্য হলেও বাংলাদেশে বাজারজাত করছে এসিআই ফার্টিলাইজার। এ সম্পর্কে এসিআই ফার্টিলাইজারের বিজনেস ডিরেক্টর বশির আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এগ্রিনিউজকে জানান ’নেব‘ একদিকে যেমন কৃষকের শতকরা ৫০ ভাগ খরচের সাশ্রয় করবে অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ ইউরিয়ার চাহিদা রোধ করবে।“
তিনি আরো বলেন “কৃষকের কাছে সহজলভ্য প্রযুক্তি এবং সেই সাথে কম খরচের সার পৌছে দিতে কাজ করছে এসিআই ফার্টিলাইজার”।