সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪

ব্রি ধান৭৬ নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী কৃষি সচিব

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): ‘একাত্তরে আমাদের লোকসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। দীর্ঘ ৪৭ বছর পেরিয়ে এখন দেশে প্রায় সতেরো কোটি মানুষ। সেই সাথে কমছে জমির পরিমাণ। পাশাপাশি বছরে যোগ হচ্ছে প্রায় ২০ লাখ নতুন মুখ। এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করেই ফসলের উৎপাদন বাড়াতে হবে’। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) পটুয়াখালীর দশমিনায় ব্রি ধান৭৬’র শস্য কর্তন ও কৃষক মাঠদিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্।

চাষিদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, আমি যতটুকু ঘুরে দেখলাম; তাতে মনে হচ্ছে কৃষিকাজে আপনারা অনেক সচেতন। আমার বিশ্বাস, চলতি মৌসুমে উৎপাদিত ব্রি ধান৭৬’র পুরো অংশ আগামী বছরের জন্য বীজ হিসেবে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিবেন। এভাবেই এ এলাকায় আমনের উৎপাদন বেড়ে যাবে। ফলে এ জাতের ধানচাষে অন্য কৃষকরাও উৎসাহিত হবেন।

ব্রি ধান৭৬’র শস্য কর্তন ও কৃষক মাঠদিবস উপলক্ষ্যে ওইদিন উপজেলা কৃষি অফিসারের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. নাসিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, ডিএই বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওমর আলী শেখ, স্থানীয় ইউপি. চেয়ারম্যান মহিবুল আলম, প্রদর্শনী চাষি মোস্তফা সর্দার প্রমুখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ব্রি ধান৭৬ বিএডিসি’র খামারে বীজবর্ধন করে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। কৃষকরা এর সুফল পেয়ে আগামী বছর থেকে আমাদের বীজ বিক্রয় কেন্দ্রে দলে দলে হাজির হবেন।

আলোচনা সভায় কৃষকের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখে ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, মনে হচ্ছে এ যেন এক বিশাল সমাবেশ। এ ধরনের লোকারণ্য এর আগে দেখিনি।

উল্লেখ্য, ব্রি ধান৭৬ অলবণাক্ত জোয়ার-ভাটা অঞ্চলের জন্য উপযোগী। এ জাতের ধান পাকার পরেও গাছ সহজে হেলে পড়ে না। আমনের স্থানীয় জাতগুলোর চেয়ে এর ফলন প্রায় দেড়গুণ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম, ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. তমাল লতা আদিত্য, আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল ওহাব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের একান্ত সচিব (উপসচিব) মো. আল মামুন, ডিএই পটুয়াখালীর উপপরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত, বিএডিসি’র যুগ্মপরিচালক ড. একেএম মিজানুর রহমান, আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন, উপজেলা কৃষি অফিসার বনি আমীন খান প্রমুখ। ‍

সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন গলাচিপা উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল মন্নান। এছাড়াও মাঠ দিবসের পুরো অনুষ্ঠান ধারণ করে কৃষি রেডিওতে সম্প্রচার করা হয়। এতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সহস্রাধিক কৃষাণ-কৃষাণি অংশগ্রহণ করেন।

This post has already been read 4910 times!

Check Also

আমন ধানে ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার আক্রমণ: ফলনের ক্ষতি ও করণীয়

ড. মো. মাহফুজ আলম: বাংলাদেশে ধান প্রধান ফসল হিসেবে পরিচিত এবং এর উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির …