কৃষিবিদ ডক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম: মানসম্মত ভালো বীজ ব্যবহার করে অনেক সমস্যার উৎরানো যায়, আয়েশে ফসল উৎপাদন করা যায়। সে জন্য কৃষি উৎপাদনের প্রথম ধাপ হলো ভালো জাতের ভালো মানের ফসলের বীজ ব্যবহার করা সুনিশ্চিত করা। ভালো মানের বীজ ব্যবহার করলে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত ফলন দিতে পারে। বীজ বপনের আগে অংকুরোদগম পরীক্ষা করে নিতে হয়। তখন বীজের পরিমাণ কম লাগবে। বীজ বপন রোপণের আগে অবশ্যই উপযুক্ত রাসায়নিক বা জৈববালাইনাশক ব্যবহার করে বীজ শোধন করে নিলে পরবর্তীতে কম ঝামেলায় ফলন ঘরে তোলা যায়। অনেক বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কথায় আছে- সুবংশে সুসন্তান সুধীজনে কয়, সুবীজে সুফল পাবে নিশ্চয়। সেজন্য ফসল উৎপাদনের প্রথম ধাপে অবশ্যই ভালোগুণগত মানসম্মত বীজ ব্যবহার করতে হবে।
আগামি দিনের সুষ্ঠু সবল স্বাস্থ্যসম্মত প্রজন্মের জন্য ভালোমানসম্মত বীজের খুব প্রয়োজন। এজন্য বীজ সংরক্ষণ একটি অতি প্রয়োজনীয় কাজ। যে কোন বীজকে ভালোভাবে শুকিয়ে অন্তত ১০ থেকে ১২ শতাংশ বীজের আর্দ্রতায় এনে ঠা-া পরিষ্কার করে পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। পাত্র মাটির হলে আলকাতরা, কলা বা রঙ দিয়ে লেপে দিতে হবে। তাছাড়া প্লাস্টিকের, টিনের, পলিথিনের পাত্রে/প্যাকেটে বীজ সংরক্ষণ করা যায়। বীজপাত্রের মুখে শুকনো বিশকাটালি, নিম, নিশিন্দা, ল্যান্টানা পাতারগুঁড়া দিয়ে ভালোভাবে বায়ুরোধী করে বীজ সংরক্ষণ করতে হবে। বীজপাত্র কখনও সরাসরি মাটিতে বা ফ্লোরে রাখা যাবে না। তাকে, কাঠে, ল্যাকে, চৌকিতে, উঁচু জায়গায় বা ঝুলিয়ে রাখতে হবে তবেই পুরোবছর বীজ মানসম্মত থাকবে। মনে রাখতে হবে, আজকের মানসম্মত বীজ আগামী দিনের কাক্সিক্ষত ফসলে আসল উৎস।
লেখক: অতিরিক্ত পরিচালক, ক্রপস উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা।