Wednesday , April 2 2025

দেশি শিং মাছের আঙ্গুলী পোনা উৎপাদন

কৃষিবিদ মো. আরিফুল ইসলাম: শিং মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু। মাছের বাজারে দেশি শিং বা জিওল মাছের চাহিদা ব্যাপক। সুস্থ-অসুস্থ সব শ্রেণীর মানুষের পছন্দের মাছ শিং। আমাদের খাল-বিলে এক সময় প্রচুর শিং মাছ পাওয়া যেত। বিভিন্ন কারণে এখন আর শিং মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না। ডোবা, ছোট ছোট পরিত্যক্ত পুকুর এবং পরিকল্পিত পুকুরে চাষ যোগ্য।

জলজ পরিবেশ বিভিন্ন কারণে বিপন্ন হওয়ায় মাছটির প্রজনন এবং বিচরণ ক্ষেত্র সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে মাছটি বিলুপ্তপ্রায়। অত্যন্ত সুস্বাদু এই মাছটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা এবং চাষের জন্য প্রয়োজনীয় পোনা উৎপাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে গবেষণার মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন, পোনা উৎপাদন এবং চাষ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। কৃত্রিম প্রজননের পদ্ধতি উদ্ভাবিত হওয়ায় পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে শিং মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। নিচে শিং মাছের আঙ্গুলী পোনা উৎপাদনের প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হলো-

আঙ্গুলী পোনা উৎপাদন
১. নার্সারি পুকুরে ৫-১০ দিন বয়সের ধানী পোনা মজুদ করে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আঙ্গুলী পোনা পাওয়া যায়।
২. নার্সারি পুকুর সঠিকভাবে প্রস্তুত করে ৫-১০ দিন বয়সের ধানী পোনা শতাংশপ্রতি ৮০০০-১০,০০০ টি পর্যন্ত মজুদ করা যেতে পারে।
৩. নার্সারি পুকুর ১ মিটার উঁচু জাল দিয়ে ঘিরে দিতে হবে যাতে ক্ষতিকর ব্যাঙ, সাপ পুকুরে প্রবেশ করতে না পারে।
৪. প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন দেহের ওজনের ২ থেকে ৩ গুণ খাবার ২ বারে খাওয়াতে হবে।
৫. খাদ্য হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত চিংড়ি বা পাঙ্গাসের নার্সারি ফিড ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬. পোনা ছাড়ার ৩০-৪৫ দিনের মধ্যে পোনার আকার গড়ে ৪-৫ সেমি. হয়।
৭. পুকুর ছাড়াও স্টীলের ট্রে, সিমেন্টের ট্যাংক কিংবা জালের খাঁচায়ও আঙ্গুলী পোনা উৎপাদন করা যেতে পারে।
৮. স্টীলের ট্রে, সিমেন্টের ট্যাংক কিংবা জালের খাঁচায় প্রতি বর্গমিটারে ১০০-২০০টি ধানী পোনা মজুদ করে ৩০-৪০ দিন পর আঙ্গুলী পোনা পাওয়া যায়।
৯. এ ক্ষেত্রে খাদ্য হিসেবে নার্সারি ফিড বা জু-প্লাংকটন দেয়া যেতে পারে।

This post has already been read 3951 times!

Check Also

জেলে নিবন্ধন তালিকায় নারী মৎস্যজীবীদের অগ্রাধিকার দিতে চাই -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মনপুরা (ভোলা) : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্যজীবীদের তালিকায় অনেক অমৎস্যজীবী অন্তর্ভুক্ত …