ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): গতবারের চালের সংকট নিরসনে জেলার চাষিরা বোরো আবাদে ঝুঁকে পড়লেও মাঝপথে থমকে গেছে। নয় উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নে ইউরিয়া সারের সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতি কেজি ইউরিয়া ১৬ টাকার পরিবর্তে ১৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের প্রাক্কালে জেলার বোরো চাষিরা ইউরিয়া সংকটের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানায়। জেলা প্রশাসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ ৪হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ করেছে। আগামী শনিবার প্রধানমন্ত্রী খুলনায় আসছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ডিলার এসোসিয়েশনের সূত্র জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে চট্রগ্রাম সিএলএফ সার কারখানা চাহিদার ৫০ শতাংশ বরাদ্দ দেয়। সেখান থেকে সার আসতে ১৫দিন বিলম্ব হয়। এতে সংকট দেখা দেয় জেলার সর্বত্র।
জেলা প্রশাসনের বিসিআইসি কর্তৃপক্ষকে ২০ ফেব্রুয়ারি দেয়া আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আইলা বিধ্বস্ত খুলনার দাকোপ, পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলায় অতিরিক্ত সাড়ে ৭হাজার হেক্টর জমিতে বোরো, গম, ডাল, সূর্যমূখী ও শাকসবজির আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি চিংড়ি মৌসুম শুরু হওয়ায় খামারেও ইউরিয়ার চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বোরো মৌসুমে জেলার ৬৮টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৫শ’ ১৪ মেট্রিক টন ইউরিয়া বরাদ্দ হলেও কর্তৃপক্ষ ১০ হাজার ৭শ’ মেট্রিক সরবরাহ করে। ঘাটতি দেখা দেয় ৫হাজার ৮শ’ ১৩ মেট্রিক টন। ঘাটতি পূরণে জেলার বোরো চাষিরা হাঁপিয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের প্রাক্কালে কৃষকরা এ সংকট নিরসনের জন্য স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে জানায়। কৃষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ৫ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দর জন্য বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন পাঠায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রবিবার (২৫ফেব্রুয়ারি) খুলনার শিরোমণি বাফার গুদাম থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন সার উত্তোলনের জন্য ডিলার কাছে বরাদ্দ পত্র পাঠিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ও কৃষিবিদ আব্দুল লতিফ জানান, ইউরিয়ার সংকট কেটে গেছে। কৃষকরা সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে চাহিদা অনুযায়ী সার পাবে। ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি গাজী আবুল কালাম আজাদ জানান, বিসিআইসি’র বরাদ্দর পর ইউরিয়া সারের সংকট কেটে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, জেলায় ৫১ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৯শ’ ৬১ মেট্রিক টন ধান।