ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম সয়েল আর্কাইভ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে (বিশফুট ভূ-গর্ভে) এ আর্কাইভ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এটির কাজ শেষ হলে এখানে সমগ্র বাংলাদেশের বনাঞ্চল ও কৃষিভূমির মাটির সর্বমোট ১৮৫৮টি স্থানের দুই বা তিন স্তরের নমুনা সংরক্ষিত থাকবে যা ভবিষ্যতে বিভিন্ন গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই একাডেমিক ভবনটি তৈরি হয়েছিলো দেশের প্রথম ভাসমান ভিত্তি নকশার ওপর। ভবনটির মাটির ওপরে চারতলা থাকলেও মাটির নীচে রয়েছে প্রায় দু’তলা সমান ফাঁকা ভিত্তি গ্রাউন্ড। আর্কিমিডিসের সূত্র ধরে এ ধরনের ফাউন্ডেশনে তৈরি এটিই প্রথম ভবন যার নির্মাণ কাজ ১৯৯৬ সালে শুরু হয়ে ১৯৯৯ সালে শেষ হয়। গ্রাউন্ডে (মাটির নীচে) যে ফাঁকা জায়গা এতোদিন অব্যবহৃত ছিলো সেটার অংশ বিশেষ কাজে লাগিয়ে এ আর্কাইভ তৈরি করা হচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-এফএও এবং বাংলাদেশ বন বিভাগ এ আর্কাইভ তৈরিতে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় এই আর্কাইভের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। তিনি কাজের অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রদর্শন করে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ক্ষেত্রে জায়গার যে স্বল্পতা রয়েছে তার মধ্যে ভূ-গর্ভে এমন একটি আর্কাইভ তৈরির উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। ভবনটির নীচে আরও যে খালি জায়গা রয়েছে তাও কোনো কাজে ব্যবহার করা যায় কি না সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান জনান। পরে তিনি নিউট্রিয়েন্ট ডিনামিক্স ল্যাবরেটরির কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।
এই আর্কাইভ তৈরির কাজটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের তত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আশা করেন যে, আর্কাইভের কাজ চলতি বছরের জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হবে। উপাচার্যের পরিদর্শনের সময় সাথে ছিলেন জীব বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর এ কে ফজলুল হক, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলাম, ফউটে ডিসিপ্লিনের প্রফেসর আরিফা শারমিন, প্রফেসর ড. শরীফ হাসান লিমন, সহযোগী অধ্যাপক এস এম রুবাইয়াত আবদুল্লাহ ও গবেষণারত শিক্ষার্থীবৃন্দ।