চট্টগ্রাম সংবাদাতা: খাদ্য অধিকার ও পুষ্ঠি নিরাপত্তায় সমর্থন দিয়ে ক্ষুদ্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয় ঘোষনা করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০৩০ (এসডিজি) অনুমোদিত হয়েছে। আর এসডিজি বাস্তবায়নে প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গিকার ও সহযোগিতামুলক আইন ও নীতি। নীতি ও আইন যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। তাই এসডিজির মুল লক্ষ্য অনুযায়ী দেশে সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করতে দ্রুত খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন জরুরী। অন্যদিকে পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ি দেশের ০৪ কোটি দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করে এবং এর মধ্যে ০২ কোটি লোক অতিদরিদ্র। দৈনিক ২১২২ ক্যালরী খাবার কিনতে অক্ষম তারাই দরিদ্র।
সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্ঠির নিরাপত্তা বিধান ও খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর গণজমায়েত ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশব্যাপী কর্মসুচির অংশ হিসাবে মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) নগরীর জামালখানস্থ প্রেসক্লাব চত্বরে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণজমায়েতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ডাঃ একিউএম সিরাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্যা সাহিদা আকতার, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ চট্টগ্রামের সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব নেতা আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, গণঅধিকার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি সোমাইয়া সালাম, এডাব চট্টগ্রামের সাধারন সম্পাদক উৎফল বড়–য়া, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী সিকদার, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এন এম রিয়াদ, নোমান উল্লাহ বাহার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তত্ব সহিদুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী সেলিম হোসেন চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা খাইরুল বাশার, নারী নেত্রী রুবি খান, মিলি চৌধুরী, সালমা জাহান মিলি, নার্গিস চৌধুরী, মৌসুমী আকতার এসডিএস, নেছাররুল হক নাজমুল প্রত্যয়, সুদর্শন বড়–য়া আইডিএফ, অগ্রদুদ বড়–য়া, সংসপ্তক, মোঃ মনজুর অলী, আইএসডিসিএম, ইয়াছমিন আকতার, ইলমা, ফারুক চৌধুরী, পুটিবিলা সমাজ কল্যান, ক্যাব নেতা মোতালেব মাস্টার, হারুন গফুর ভুইয়া, আলমগীর বাদসা, জানে আলম ক্যাব চান্দগাঁও, সজল দাস জয়বাংলা শিল্প গোষ্টি, মুক্তা শেখ মুক্তি আইএসডিই, আনোয়ার হোসেন, ক্যাব পাচলাইশ, জহুরুল ইসলাম, ইশিকা ফাউন্ডেশন ও ক্যাব আইবিপি প্রজেক্ট এর মশিউর রহমান প্রমুখ।
গণজমায়েতে বিভিন্ন বক্তাগন বলেন খাদ্য ও পানীয় এখন আর নিরাপদ নাই। সরকারের অনেকগুলি আইন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থাকলেও গতানুগতিক ধারায় তাঁরা কাজ করলেও জনগন মরণঘাতি এ ভেজাল থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বিশেষ করে খাদ্য, পানীয় ও ফল এখনও পুরোপুরি নিরাপদ নয়। আগামী রমজান উপলক্ষে খাদ্যে ভেজালকারি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে জনগনের পকেট কাটার জন্য তৈরী হয়ে বসে আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রমজান, পুজা, পার্বন ও বড় দিনে মূল্য হ্রাস হলেও আমাদের দেশে জনগনের পকেট কাটা ও খাদ্যে ভেজাল মিশানোর জন্য নিরাপদ সময় হিসাবে বেছে নেন। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের শিথিলতায় ও প্রশ্রয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা এধরনের অনিয়মের সাথে জড়িত হলেও রাজনৈতিক সংস্লিষ্ঠতায় তারা পার পেয়ে যায়। যার কারনে পুরো দেশ জুড়ে অসন্তোষ সৃষ্ঠি হয়। তাই সরকারকে গুটিকয়েক অসাধু লোকের দায়ভার নিজেদের কাঁধে না নিয়ে এসমস্ত লোকগুলিকে কঠোর হস্তে দমন করার দাবি জানান। একই সাথে ভেজালের সাথে জড়িতদের জরিমানার পরিবর্তে দন্ড দেয়া ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলির তালিকা সংস্লিষ্ঠ দপ্তরগুলির ওয়েবসাইট ও মিডিয়াতে প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।
গনজমায়েতে বক্তাগন আরো বলেন খাদ্য উৎপাদন ও বিপনণে বহুজাতিক কোম্পানী ও দেশীয় কর্পোরেট হাউজ গুলির ক্রমাগত আধিপত্যের কারনে সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। আর সে কারনে বিগত বিশ বছরে দেশে খাদ্যের মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুনেরও অনেক বেশী, মোটা চালের দাম বিগত ০১ বছরে দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্দি পেয়েছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলিতে খাদ্যের মূল্য সেভাবে বাড়েনি। একদিকে প্রকৃত কৃষক তার উৎপাদিত খাদ্য পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, অনদিকে মিলমালিক, আড়তদার, মধ্যস্বত্বভোগী ও ফাড়িয়ারা এবং খাদ্য ব্যবসায়ীরাই সিংহভাগ হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে দেশীয় কৃষক প্রতিবছরই লোকসান গুনছে। সেকারনেই সবার জন্য খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদানে রাস্ট্রকে বাধ্য করতে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।