রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

এন্টিবায়োটিক ফ্রি খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে নারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পোলট্রি শিল্প বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত উৎপাদন এর অন্যতম কারণ। দেশে বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ব্রয়লার বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে যা চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত। অচিরেই এই অবস্থার অবসান হবে। সেজন্য আমাদের সবাইকে ধৈর্য্য ধারন করতে হবে। বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো পোলট্রিতে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে না পারলেও বাংলাদেশ সেটি পেরেছে। এটি আমাদের একটি বড় অর্জন।

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় নারিশ পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারী লি. কর্তৃক পরিবেশক সম্মেলনে এসব কথা বলেন, নারিশ পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারী লি. -এর পরিচালক এবং ওয়াপ্সা-বিবি’র সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকারিভাবে পোল্ট্রি খাদ্যে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এশিয়া মহাদেশে এটি দ্বিতীয়। বিশ্বে তিনটি দেশ বেশি পোল্ট্রি উৎপাদন করে যেমন-ব্রাজিল, আমেরিক ও চীন। তারা এন্টিবায়োটিক বন্ধ করতে পারেনি, আমরা পেরেছি। নারিশ বর্তমানে এন্টিবায়োটিক ফ্রি খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। আমাদের উৎপাদিত খাদ্যে ক্ষতিকারক কোন উপাদান নেই। এরপর পরিবেশদের দাবী-দাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর খাদ্যের প্রতিটি উপাদানের দাম ২-৬ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেলেও আমরা এক টাকাও খাদ্যের দাম বাড়াইনি। বর্তমানে তিনটি বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। এক. বিদেশী কোম্পানীর ইন্টিগ্রেশন কমানো; দুই. এন্টিবায়োটিক ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করা এবং (৩) রেজিস্ট্রেশন ছাড়া খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধ করা।

সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন খালেদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং নারিশ পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারী লি. -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল আহসান খালেদ

সম্মেলনে খালেদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং নারিশ পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারী লি. -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল আহসান খালেদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অপুষ্টির কারণে খর্বাকৃতি। সেই তাগিদ থেকে আজ থেকে ১৯ বছর আগে ১৯৯৯ সালে এদেশের মানুষের পুষ্টির অভার দূরীকরণের লক্ষ্যে নারিশ পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারী গড়ে তোলা হয়। আজ ব্রয়লার ফিড উৎপাদনে নারিশ দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে। সকলের সহযোগিতায় আমরা এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে চাই।

Farmers first স্লোগানকে সামনে রেখে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মেলনের শুভ সূচনা করা হয়। এর পর গত দুই বছরে যে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ (নারিশের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা রয়েছে) ইন্তেকাল করেছেন তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবেশক ও অতিথিদের আগমনে সম্মেলনস্থল সকাল থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ হতে থাকে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোম্পানীর মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বাজারাজাতকরণ) মো. সামিউল আলিম স্বাগত বক্তব্য দেন। নিরাপদ খাদ্য তৈরিতে নারিশ অপ্রতিদ্বন্দ্বি। লেয়ার খামারীদের লেয়ার-ল্যাব সেবা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠিকে ডিম ও মাংস খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের আরো উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এরপর নারিশ ক্যাটেল ফিড ও নারিশ ডেইরী ফিড এর উপর একটি ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে পরিবেশকদের পক্ষ থেকে তিনজন পরিবেশক তাদের মতামত, আলোচনা-সমালোচনা, দাবী-দাওয়া, চাওয়া-পাওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং নোট করেন।

পরিবেশকদের মধ্য থেকে ব্রয়লার ফিড নিয়ে বক্তব্য দেন, চট্টগ্রাম লোহাগড়া থেকে আগত এম.এস পোল্ট্রি ফিড-এর স্বত্ত্বাধিকারি তৈয়ব তাহের। লেয়ার ফিড নিয়ে বক্তব্য দেন পাবনা থেকে আগত ভাই ভাই পোল্ট্রি ফিড এর স্বত্তাধিকারী সৈয়দ মোন্তাজ আলী এবং ফিস ফিড ডিলারদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন হাজী মো. হাতেম আলী, যশোর।

সম্মেলনে কোম্পানী প্রোফাইল নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। তাতে জানানো হয় ১৯৯৯ সাল থেকে নারিশের পদযাত্রা শুরু হয়। এদেশের মানুষের সস্তায় নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর আমিষ তথা পোল্ট্রি মাংস যোগান দেয়ার অভিপ্রায়ে নারিশের এ শিল্পে আগমন। কোয়ালিটি, কমিটমেন্ট ও সততার গুণে দিনে দিনে খামারিদের পছন্দের তালিকায় নারিশ শীর্ষস্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছে। প্রচুর চাহিদার কারণে বর্তমানে ময়মনসিংহ, বগুড়া, যশোর, চট্টগ্রাম এবং শ্রীপুরের কারখানায় ৭০-৭২ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদিত হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সময়মতো পৌঁছে যাচ্ছে।

মধ্যাহ্ন ভোজের পর বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে পুরষ্কারপ্রাপ্ত পরিবেশকবৃন্দকে পুরষ্কার, ক্রেস্ট ও উপহারসামগ্রী তুলে দেন।

সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন ডা. এসএমএ হক। এ সময় কোম্পানির সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 19754 times!

Check Also

সাড়ে ৬ টাকা দরে ভারতীয় ডিম এলো বাংলাদেশে!

এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: ডিম আমদানির অনুমতির পর চতুর্থ চালানে এবার ভারত থেকে ডিম আমদানি হলো সাড়ে …

One comment

  1. আলহামদুলিল্লহ্,
    পড়ে ভালই লাগল। আমরা এই আসায় এই ব্যবসা করতেছি, আল্লাহ্ জানে এর অবসান কবে হবে।
    আমি মেসার্স আর,কে,পোল্ট্রী।ডিলার কাজী ফর্মস্, নালিতাবাড়ী, শেরপুর। প্রোঃ মোঃ আব্দুল্লাহ্ আল কায়েস।মোবাইল নং ০১৭১২৫৩২৯৭১