মো. খোরশেদ আলম জুয়েল: কেউ নিয়ে এসেছে ফলের চারা, কেউবা আবার ফুলের চারা, ফল গাছের কাটিংও নিয়ে এসেছে কেউ কেউ নিয়ে এসেছে সবজি বীজ। সবার আজকে মিলনমেলা। খানাপিনা দিয়ে নয়, একে অপরকে আপ্যায়ন করা হবে গাছের চারা ও বীজ দিয়ে। কোন সিনেমার গল্প নয়, আজকে কথা হবে গাছ-গাছালি নিয়ে। কীভাবে ঢাকাকে সবুজে ঢাকা যায়, নিজের বাড়ীতেই নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা যায়, পরিবেশ দূষণ রোধ করা যায় এসবই সবার উদ্দেশ্য।
রবিবার (১৩ মে) ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে শিখা চিরন্তন প্রাঙ্গণে ‘সবুজ বাগান সোসাইটি’ নামক ফেসবুক গ্রুপের প্রায় চারশ’ সবুজ আন্দোলন কর্মী একত্রিত হন। সেখানে পরষ্পরের মাঝে বিনিময় এবং আগ্রহীদের মাঝে বিতরণ করা হয় গাছের চারা, বীজ ও গাছের কাটিং।
আয়োজনে কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে গ্রুপের এডমিন এবং আয়োজক কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা মোহাম্মদ এহতেশামুল হক এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন বলেন, এক কথায় অভুতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। এক বছরের মাঝে বর্তমানে আমাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার এবং তা শুধু এদেশেই সীমাবদ্ধ না। দেশে অবস্থানরত সদস্য ছাড়াও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী বাঙালী এমনকি বিদেশী সদস্যরাও আছেন আমাদের সাথে। পৃথিবীর প্রায় ৫০ টা দেশ থেকে আমাদের গ্রুপে সদস্য আছেন।
উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা মূলত নগর কৃষি সম্প্রসারণ, মানুষের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত ও পরিবেশ দূষণ রোধে কাজ করছি। আমরা মানুষকে বিনামূল্যে গাছ ও বীজ দিয়ে থাকি সবুজ বাগান সোসাইটি এর পক্ষ থেকে। আমরা স্বপ্ন দেখি সবুজে ঢেকে যাবে এক সময় প্রিয় নগরী ঢাকা, পরিবেশ দুষণ কমবে, এই নগরীর মানুষ বিষাক্ত খাবার নিয়ে চিন্তায় ভুগবেনা। এক সময় সারাদেশের সব নগরীতে ছড়িয়ে যাবে আমাদের আন্দোলন।
তিনি বলেন, আংগুর, আম, আদা, চুই ঝাল, পর্তুলিকা, মোরগ ঝুটি, চাইনিজ ভায়োলেট, ব্লু ডেজ ইত্যাদি গাছের চারা; আংগুর, মালবেরী, টগর, জবা, ইঞ্চি প্লান্ট, আইস প্লান্ট গাছের কাটিং এবং অপরাজিতা, সাদা বেগুন, সূর্যমুখী, শসা বা খিরাই সহ প্রায় ৮/১০ ধরনের বীজ ঐদিন আমরা বিতরণ করি।
এহতেশামুল হক জানান, আমরা গত ২৫ শে অক্টোবর ২০১৬ তে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫-৪০ টা ইভেন্ট করেছি। আমরা বাগান করার জন্য আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক উপায় শিক্ষা দেয়া, যেমন- হাইড্রোপনিক, অ্যাকোয়াপনিক, কলম করা পদ্ধতি, জৈব সার প্রস্তুত ইত্যাদি বিষয়ে বিবিধ ট্রেনিং দিয়ে আসছি এবং এগুলো সবগুলোই স্বেচ্ছাশ্রম।
গ্রুপের মূল উদ্যোক্তা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমাদের মূল উদ্যোক্তা বা গ্রুপ ফাউন্ডার জার্মান প্রবাসী মীর্জা আল রাজি ভাই। আমাদের সাথে এডমিন প্যানেলে আছেন মিথুন নন্দী, বদরুল হায়দার, যুক্তরাজ্য প্রবাসী অলোক ঘোষ, রাকিব আহমেদ, কৃষিবিদ ইমরান নয়ন, সরকার পারভেজ, রেবেকা ইয়াসমিন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আশরাফি সুলতানা মনি, সুলতানা রাজিয়া মুক্তা এবং আমি মো. এহ্তেশামুল হক।