সোমবার , নভেম্বর ২৫ ২০২৪

রমজান মাসে করা কিছু প্রচলিত ভুল!

এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: চলছে পবিত্র রমজান মাস। মুসলিম উম্মাহ ব্যস্ত আল্লাহ্‌র ইবাদত বন্দেগীতে। সিয়াম সাধনার এই মাসে আমরা অনেকেই জেনে না জেনে কিছু ভুলভ্রান্তি করে ফেলি। মহান আল্লাহ্‌পাক আমাদের সে ভুলগুলো হয়তো ক্ষমাও করে দেন। কিন্তু তাই বলে আমাদের না জেনে বসে থাকলে চলবে না। জানতে হবে সঠিকটাই, আমল করতে হবে সঠিকটাই। চলুন জেনে আসা যাক রমজান মাসে করা আমাদের প্রচলিত কিছু ভুল-

* সেহরী ত্বরান্বিত করা এবং ইফতার বিলম্বিত করা অথবা সেহরী কখনোই না করা অথবা মধ্যরাতে তা খাওয়ার মাধ্যমেই যথেষ্ট মনে করা। আর এ সবগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিক-নির্দেশনার পরিপন্থি। কারণ মুস্তাহাব হলো রোযাদার সেহরী খাবে ফজর (ভোর) উদয়ের পূর্বে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথানুযায়ী:

«ثلاث من أخلاق النبوة: تعجيل الإفطار وتأخير السحور ووضع اليمين على الشمال في الصلاة»

“নবুয়তের চরিত্রের মধ্যে তিনটি: ইফতার ত্বরান্বিত করা, সেহরী বিলম্বিত করা, সালাতে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।” [ত্বাবরানী]

* কিছু রোগীর কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও রোযা রাখায় অটল থাকা। এটা ভুল; কারণ সত্য হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা মানুষের থেকে সমস্যা তুলে নিয়েছেন এবং অসুস্থের জন্য তা ভাঙার ও পরবর্তীতে তা কাযা করার অনুমতি দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ [البقرة: ١٨٥]

“কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে। তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৫]

* বালক-বালিকাদের সিয়াম পালনে অভ্যস্ত না করা। মুস্তাহাব হলো বালেগ হওয়ার পূর্বেই তাদেরকে সিয়ামে অভ্যস্ত করা যেন তারা এর চর্চা ও অনুশীলনে অভ্যস্ত হয়। বিশেষভাবে যদি তারা তা সহ্য করে যেরূপ রাবী‘ ইবন মু‘আউয়ায হতে বর্ণিত তিনি বলেন:

«فَكُنَّا نُصَوِّمُ صِبْيَانَنَا، وَنَجْعَلُ لَهُمُ اللُّعْبَةَ مِنَ العِهْنِ، فَإِذَا بَكَى أَحَدُهُمْ عَلَى الطَّعَامِ أَعْطَيْنَاهُ ذَاكَ حَتَّى يَكُونَ عِنْدَ الإِفْطَارِ»

“আমরা আমাদের বালক সন্তানদেরকে রোযা রাখাতাম আর তাদের জন্য পশমি সুতা হতে খেলনা বানাতাম, যদি তাদের মধ্যে কেউ কাঁদত খাবারের জন্য তবে আমরা তাকে তা (খেলনা) দিতাম, এ অবস্থায় থাকত ইফতার হওয়া পর্যন্ত।” [বুখারী ও মুসলিম একমত]

* ইফতারের সময় কিছু রোযাদারের সুন্নত প্রয়োগ সম্পর্কে অসাবধানতা। আপনি তাদেরকে দেখবেন তারা এটি (ইফতার) শুরু করার ক্ষেত্রে রুত্বাব, (কাঁচাখেজুর), খেজুর এবং পানি দ্বারা শুরু না করে অন্য কিছুকে অগ্রাধিকার দেয় এগুলোর উপস্থিতি সত্ত্বেও। অথচ সুন্নত হলো রোযাদার ইফতার করবে রুত্বাব দ্বারা অথবা খেজুর দ্বারা; যদি না পায় (এ দুটো) তবে কয়েক ঢোক পানি পান করবে।

* রমজানে দিনের বেলা মিসওয়াক ব্যবহার করায় সমস্যা বা অসুবিধা আছে মনে করা। হয়তো তারা মনে করে মিসওয়াক ব্যবহার করলে রোযা ভাঙে আর এটি ভুল। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لَأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ مَعَ كُلِّ صَلاَةٍ»

“আমি যদি উম্মতের উপর দুঃসহ মনে না করতাম তবে তাদেরকে প্রতি সালাতের সময় মিসওয়াক করার আদেশ দিতাম।” [বুখারী ও মুসলিম একমত]

তথ্যসূত্র : কোরআনের আলো ব্লগ

This post has already been read 3221 times!

Check Also

ভেটেরিনারি ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব) এর বিক্ষোভ সমাবেশ

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামলীগের বিদায়ের তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে …