ইফরান আল রাফি: পরিবেশ এটা তো জীবনেরই একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। পরিবেশ এর উপর নির্ভর করে চলছে প্রকৃতির জীবন সংসার। কালের বিবর্তনে আমরাই দায়ী পরিবেশ দূষণের জন্য। আধুনিকতা আর বিজ্ঞানের কল্যাণে যেমন সহজতর আর আরামদায়ক হয়ে উঠেছে আমাদের দৈনন্দিন জীবন তেমনি পরোক্ষভাবে ধ্বংস করছি আমাদের চারপাশের পরিবেশ। বাঁশ, খড় আর গোলপাতায় ছাওয়া এবং তাল পাতার হাত পাখার দেখা এখন আর মিলেনা বরং এগুলোর জায়গা দখল করে নিয়েছে স্ট্রীল, কংক্রীট, প্লাস্টিক আর এয়ারকন্ডিশনার।
শত শত একর বন ধ্বংস করে তৈরী করা হচ্ছে মিল ফ্যাক্টরি, ফসলের জমিতে তৈরী হচ্ছে বাড়তি জনসংখ্যার আশ্রয়স্থল। নদ-নদী, খাল-বিল ভরাট করে তৈরী হচ্ছে বহুতল ভবন আর জলাশয়গুলো ব্যবহার করা হচ্ছে বর্জ্যগার হিসেবে। বিজ্ঞান সম্মত বর্জ্য শোধন ব্যবস্থাপনার অভাবে যেমন হ্রাস পাচ্ছে মৎস্য সম্পদ তেমনি ভাবে ধ্বংস হচ্ছে জলজ ইকোসিস্টেম।
আধুনিকতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রতিদিন কলকারখানা থেকে নিঃসৃত হচ্ছে গ্রীনহাউস গ্যাস যা ওজনস্তরকে নষ্ট করে মানবজাতির জন্য ক্যান্সার সহ নানা রোগের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনিয়ন্ত্রিত ভাবে কার্বনডাইঅক্সাইড এর পরিমান বৃদ্ধি পাওয়া হিমালয়ের বরফ গলনের ফলে নদ নদী গুলোর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অমৌসুমে বন্যা হচ্ছে ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষি ও মৎস্য সম্পদ।
পরিবেশ দূষণ রোধে জনসচেতনা সৃষ্টির পাশাপাশি উন্নত দেশ গুলো যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে দূষণ রোধে আমাদের দেশেরও তার বাস্তব প্রয়োগ দরকার এবং জাতীয় পরিবেশ নীতির বাস্তবমুখী প্রয়োগ দরকার। জৈবিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োগও সঠিক হওয়া চাই।
পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরীর ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে “বিশ্ব পরিবেশ দিবস”। এ উদ্যোগের ফলে ব্যক্তি যেমন সচেতন হয় তেমনি তার অধিনস্তদেরকেও সচেতন করে তোলে। এ দিন কে শুধু মিটিং, সেমিনার আর র্যালির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা বরং পরিবেশ দূষণরোধে বাস্তব প্রয়োগ দরকার। পরিবেশ দূষণরোধ এখন বর্তমান সময়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
“বিশ্ব পরিবেশ দিবস“ এর কার্যক্রম থেকে শহর শুরু করে গ্রাম এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে শুধু করে তৃণমূল পর্যন্ত এর ব্যাপ্তি হওয়া চাই।