মো. সোহানুর রহমান: নিজের পকেটের টাকায় পটে গাছ লাগিয়ে নিজ নিজ হলের পরিবেশ সুন্দর করার লক্ষেই হলকৃষির সূচনা। যেখানে পটগুলো হতে পারে ফেলে দেয়া প্লাস্টিক কিংবা অন্য কোন ব্যবহার অযোগ্য বস্তু। এর ফলে পরিবেশ থেকে দূর হবে দূষণ, বাড়বে প্রত্যেকটি আাসিক হলের সৌন্দর্য। নামের সাথে কৃষি শব্দটা থাকলেও, সকল ছাত্র ছাত্রীদের জন্যেই হল কৃষি হতে পারে একটি সেচ্ছাসেবী আন্দোলন, একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ার আন্দোলন।
আমাদের দেশে ছাদে কিংবা বাড়ির সামনে গাছ লাগানো নিয়ে অনেকগুলো সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠান কাজ করে। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক বড় একটা শিক্ষিত সমাজ আবাসিক হলগুলোতে জীবনের সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিবাহিত করে। তাই যদি এখান থেকেই তাদের গাছের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়, তাহলে অটোমেটিক সবগুলো বাসার ছাদ বারান্দা গাছে ভরে উঠবে। প্রত্যেক পাড়া বা মহল্লা থেকে ন্যূনতম একটি ছেলে বা মেয়ে কোন না কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থান করেন। এরা যদি একটু এগিয়ে আসে তাহলে সারা বাংলাদেশ সবুজে ভরে উঠবে। এমন চিন্তা থেকেই হলকৃষির সূচনা।
নিজের পকেটের টাকার প্রতি সবার আলাদা একটা টান থাকে। তাই নিজের টাকায় লাগানো গাছের প্রতি আলাদা একটা ভালোবাসা কাজ করবে, গাছের প্রতি যত্ন নিতে ইচ্ছা করবে। অতিরিক্ত সময়টুকু নিজের গালানো গাছের সাথে কাটাতে ইচ্ছা হবে। তাই এই সেচ্ছাসেবী আন্দোলনে কোন অনুদান বিবেচনায় আসে নিই।
বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মানুষ তৈরির কারখানা, কিন্তু এখানেই ছাত্ররা হচ্ছে নেশাগ্রস্ত, যুক্ত হচ্ছে নানা অপরাধ ও ধ্বংসাত্মক কাজে। এভাবেই নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর দিকে। পড়াশুনার ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের পর যতটুকু সময় থাকে তা যদি গাছের পরির্চায় কাটে তাহলে কোন ছেলে মেয়ে বিপদগ্রস্ত হবে না। আর সব থেকে বড় কথা, যার ঘুম ভাঙ্গার পরে সুন্দর ভোর শুরু হবে এমন একটা সুন্দর পরিবেশ থেকে তার খারাপ হওয়ার সুযোগ কোথায়?
হলকৃষিতে ব্যবহার করা পটগুলোর হবে প্লাস্টিকের পরিত্যাক্ত বোতল কিংবা অন্যান্য ব্যবহার অযোগ্য সামগ্রী যা পরিবেশ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া এক একটি পট হয়ে উঠবে এক একটি অক্সিজেন ফ্যাক্টরি।
আমাদের স্বপ্ন সুন্দর, সবুজ ও দূষণমুক্ত বাংলাদেশের গড়ার। বাংলাদেশের সবগুলো আবাসিক হলকে সবুজে ভরে দেয়া, প্লাস্টিক সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহার এবং গাছ লাগানোর মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধে যুব আন্দোলন গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ।
লেখক: হলকৃষি উদ্যোক্তা; প্রচার সম্পাদক, বাঁধন (সেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন), পবিপ্রবি ইউনিটকৃষি অনুষদ (লেভেল-৩, সেমিস্টার-১) পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।