রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

পোলট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বাদ রেখে কার্যকর কৃষিনীতি হতে পারেনা – ড. আব্দুর রাজ্জাক, এমপি.

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিনীতি হলিস্টিক হওয়া উচিত। পোলট্রি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ এবং কৃষির অন্যান্যকে ক্ষেত্রকে বাদ রেখে একটি কার্যকর কৃষিনীতি হতে পারে না। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত নেটওয়ার্ক বিসেফ ফাউন্ডেশন -এর আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর কনফারেন্স রুম, ফার্মগেটে ‘জাতীয় কৃষিনীতি ও নিরাপদ খাদ্যে বিনিয়োগ কৌশল’ সম্পর্কিত সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি’র সভাপতি এবং সাবেক খাদ্য মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, এমপি. এসব কথা বলেন।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, রমজান মাসে যেভাবে মোবাইল কোর্ট বা ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে তা ভালো ছিল। এরকম অভিযান শুধু রমজান মাসে হলেই হবে না প্রতিদিনই হওয়া উচিত তবেই পরিবর্তন আসবে। এজন্যই নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠণ করা হয়েছে। তাদেরকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে।

সংলাপের বিশেষ অতিথি ড. ইব্রাহীম খালেদ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চত করতে নিরাপদ খাদ্য গঠনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই ফাউন্ডেশন কার্যকর করতে হলে যথাযথভাকে এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে হবে। একেবারে সরকারি হলেও এটি কাজ করবে না, আবার একেবারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও কার্যকর হবে না। সম্মিলিত প্রয়াস ঘটাতে হবে।

বিশেষ অতিথি তত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, কৃষিকে আগামী দিনের প্রবৃদ্ধির চালক হিসেবে দেখতে হবে। এজন্য নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ে দৃষ্টিভঙ্গির উত্তরণ ঘটাতে হবে। পাটকে সোঁনালী অতীত না বলে কিভাবে পাটকে সোনালী ভবিষ্যৎ বানানো যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে। নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রে এই যে গ্যাপ নির্ধারণ হচ্ছে না, সেটাও নীতি নির্ধারনী পর্যায় থেকে হতে হবে।

সংলাপে উপস্থিত বক্তাগণ উল্লেখ করেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বিপণন পর্যায়ে সমন্বয় সাধনের উদ্দেশ্যে সরকার নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ প্রণয়ন করেছে। ‘নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ প্রণয়ন বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কিন্তু শুধু আইনের প্রয়োগ নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করবে না। এর জন্য উৎপাদক থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত একটি কার্যকর ভ্যালু চেইন গড়ে তোলা দরকার। সরকারের প্রায় ১৮টি বিভাগ ও দপ্তর খাদ্য চক্র ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিত করে কাজ করার মাধ্যমেই কেবলমাত্র টেকসই নিরাপদ খাদ্য চক্র গড়ে তোলা সম্ভব।

উক্ত সংলাপে নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থার সকল স্তরে বিশেষ করে ক্ষুদ্র উৎপাদক ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে অর্থায়ন সহজলভ্য করার দাবী বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়। এছাড়াও সংলাপে তৃণমূল থেকে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার করণীয় বিষয়ক প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ তুলে ধরা হয়।

আয়োজিত অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শামসুল আলম, সদস্য (সিনিয়র সচিব), সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন; খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, অর্থনীতিবিদ ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ বাংক; ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অর্থনীতিবিদ ও উপদেষ্টা, সাবেক তত্বাবধায়ক সরকার; মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ, সদস্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ; ড. মো. কবীর একরামুল হক, নির্বাহী চেয়ারম্যান, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল।

এছাড়াও আয়োজিত মতবিনিময় সভায় কৃষি ও খাদ্য নিয়ে কর্মরত আরও অনেকই বক্তব্য রেখেছেন।  সংলাপ পরিচালনা এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক।

This post has already been read 3308 times!

Check Also

বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতে কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে -কৃষি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন,  বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন …