রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

দুই মৌসুমেই চাষযোগ্য বিনাধান১৯ -এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

এ.টি.এম ফজলুল করিম (পাবনা) : বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বিনা ধান-১৯ এর প্রচার ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এক মাঠ দিবস আটঘরিয়া উপজেলার ধলেশ্বর গ্রামের মাদ্রাসা মাঠে গতকাল (২৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনাস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিঃ উপ-পরিচালক কৃষিবিদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঈশ্বরদীস্থ উপকেন্দ্রের ঊধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. রোকনুজ্জামান, আটঘরিয়া, উপজেলা কৃষি বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুর রাজ্জাক, পাবনা আঞ্চলিক কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা এ.টি.এম ফজলুল করিম এবং স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর এ.কে.এম ফরহাদ হোসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিনা ধান -১৯ এর আবাদকারী প্রদর্শনী প্লটের চাষী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ আমি আউশ মৌসুমে এক বিঘা জমির প্রদর্শনী প্লটে এই ধান আবাদ করে ২০ মন ১০ কেজি ফলন পেয়েছি। এই ধান চাষে সেচ না দিলেও চলে। এই ধানের জীবন কাল ১শ’ ৫দিন; চাউল সরু চিকন। অন্যান্য আউশ ধানের চেয়ে ফলন বেশি।”

অনুষ্ঠানে ধানটির উদ্ভাবক বিভাগ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. রোকনুজ্জামান বলেন, আউশ এবং আমন মৌসুমে আবাদ উপযোগী এই ধানটি অন্যান্য আউশ জাতের ধানের চেয়ে ফলন বেশি। আউশ মৌসুমে বপন অথবা রোপন দুই পদ্ধতিতেই এ ধানের আবাদ করা যায়। পরিবেশবান্ধব পানি সাশ্রয়ী এ ধানটি ক্ষরা সহিষ্ণু এবং স্বল্প জীবনকাল বিশিষ্ট। ধানটির ভাত খেতে বেশ মিষ্টি, চাউল সরু চিকন এবং সাদা।

প্রধান অতিথি কৃষিবিদ আবুল খায়ের মোল্লা বলেন, পরমানু কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বৈরী আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়ার উপযোগী এ ধানটি উদ্ভাবন করেছে যা কৃষকের জন্য খুবই লাভজনক । আউশ-আমন দুই মৌসুমেই আবাদ করা যায়। ধানটির জীবনকাল খুবই অল্প অর্থাৎ ১শ ৫দিন হওয়ায় কৃষকদের জন্য খুবই উপযোগী। ধানটির খড় ও তুলনামূলক হারে বেশি। তিনি উপস্থিত সকল কৃষক-কিষানীকে এই জাতটি আবাদের মাধ্যমে লাভবান হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ছয়িমা খাতুন। অন্যন্যের মধ্যে সাংবাদিক শফিউল আলম, কৃষি তথ্য কর্মকর্তা এ.টি.এম ফজলুল করিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এর আগে প্রদর্শনী প্লটটির ধান আগত চাষীদের দেখানো হয় এবং নমুনা শস্য কর্তন করে হেক্টরে ৫.৫৪ মে.টন ফলন রেকর্ড করা হয়। আগত চাষিদের সকলেই ধানটি আবাদের সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং দ্রুত বীজ সরবরাহের আবেদন জানান। অনুষ্ঠানে প্রায় ২ শতাধিক চাষী উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 3836 times!

Check Also

আমন ধানে ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার আক্রমণ: ফলনের ক্ষতি ও করণীয়

ড. মো. মাহফুজ আলম: বাংলাদেশে ধান প্রধান ফসল হিসেবে পরিচিত এবং এর উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির …