শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

মাছ ও খাদ্যের গুণগতমানের নিশ্চয়তা খামারি ও উৎপাদককেই নিশ্চিত করতে হবে – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাছ ও খাদ্যের গুণগতমানের নিশ্চয়তা খামারি ও উৎপাদককেই নিশ্চিত করতে হবে।আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে যেয়ে মন্ত্রী বলেন, সনাতন পদ্ধতির বদলে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের দিকে ঝুঁকতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এর বিকল্প নেই। তবে আমাদেরকে মাছের গুণগত মান ঠিক রাখতে হবে।

সোমবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৮ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এম.পি।

মন্ত্রী বলেন, মৎস্যখাতে অনেক অর্জন থাকলেও গুটিকয়েক অতি লোভী ব্যাক্তির কারণে এ খাতের বদনাম হচ্ছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ ও মৎস্য চাষিরা। এদেরকে শায়েস্তা করার জন্য শুধুমাত্র আইন করলেই চলবেনা। আমাদেরকে আরো বেশি সচেতনতা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মৎস্য সেক্টরে বিশাল অর্জনের পরও দুটো চ্যালেঞ্জ এখনো বিদ্যমান। একটি হলো নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া এবং লবণাক্ত এলাকা বৃদ্ধি পাওয়া। এজন্য সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা দরকার, পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরো বেশি শক্তিশালী করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, সমুদ্রের বিশাল একটি অংশ আমরা জয় করতে পারলেও সেগুলোকে এখনো আমরা ব্যবহার করতে পারিনি। সেজন্য জরিপ ও গবেষণা কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। সামগ্রিক রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, বাগদা চিংড়ির গুণগতমানের পোনা উৎপাদনের ঘাটতি রয়েছে আমাদের। উপকূলীয় এলাকাগুলোকে আরো বেশি বাগদা চিংড়ি চাষ করা যেতে পারে। মৎস্য খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রায় ৮০ ভাগ আসে আমাদের বাগদা চিংড়ি রপ্তানির মাধ্যমে। রপ্তানির জন্য আমাদের নিরাপদ চিংড়ি উৎপাদনকে জোরদার করতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গুলজার হোসেন বলেন, মাছের ভ্যালু এডেড পণ্য তৈরি করতে হবে। পোলট্রির মতো মাছেরও বল, সসেজ, বার্গার ইত্যাদি খাবার তৈরি করতে হবে যাতে শিশুরা আগ্রহ নিয়ে খেতে পারে। এতে করে চাষিদের মাছের ন্যায্যমূল্য পাওয়া সহজ হবে।

তিনি বলেন, সমুদ্রে মাছের সঠিক পরিমাণ নিরূপনের জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। সেটি নিরুপন করা গেলে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করা সহজ হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, আভ্যান্তরীন জলাশয়ে মাছের উৎপাদন আমাদেরকে আরো বাড়াতে হবে। প্রচলিত মাছের পাশাপাশি রপ্তানির জন্য অপ্রচলিত মাছের উৎপাদনের দিকেও নজর দিতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা কাঁকড়ার রেণু উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, গুনগত মানের পোনা ও খাদ্যের দাম মাছ চাষের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা। হ্যাচারিগুলোকে চাষের ক্ষেত্রে গুণগতমানের পোনার নিশ্চয়তা দিতে হবে। খাদ্যের দাম সহনশীল পর্যায়ে রাখতে হবে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান দিলদার আহমেদ বলেন, খাদ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন মৎসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু আমাদের মৎস্য গেক্টরের একটি বড় সমস্যা হলো মাছ সংরক্ষণের অভাব। সঠিক সংরক্ষণ, পরিবহন ও প্যাকেজিং এর অভাবে বছরে প্রচুর পরিমানে মাছ নস্ট হয়। সেজন্য চাঁদপুরে রেলওয়ের জায়গা নিয়ে আমরা সেখানে একটি ল্যান্ডিং স্টেশন করার পরিকল্পনা করেছি। এতে করে দেশের মানুষ সারা বছর ইলিশ খেতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনীর মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, যশোর-১ (শার্শা) আসনের এম.পি শেখ আফিল উদ্দিন।

This post has already been read 3164 times!

Check Also

যে জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়, ওই জেলার মানুষ গরিব হতে পারে না -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ভোলা সংবাদদাতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশের সম্পদ রক্ষায় সবাইকে একসাথে কাজ …