মাহফুজুর রহমান: আগষ্টের শুরু থেকেই বাজারে আসতে শুরু হয়েছে সকলের সুপরিচিত প্রিয় ফল কদবেল।এখন কিছুটা কাঁচা অবস্থায় থাকলেও সারা শরৎকাল (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) জুড়ে শহর বন্দর, হাট-বাজার, ট্রেন স্টেশন, বাস স্ট্যান্ডে পাঁকা কদবেল পাওয়া যায়।
বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সুগন্ধ ও অম্ল মধুর স্বাদের জন্য কদবেলের কদর সবাইর কাছে। শিশু কিশোর ও মেয়েদের কাছে খুবই প্রিয়। গাছে পাঁকা কদবেল ঘরে রাখলে এর সুগন্ধে ঘর ভরে যায়। ফলটি দেখতে অনেকটা ক্রিকেট বলের মত। এর পাতা দেখতে অনেকটা কামিনী ফুলের পাতার মত। বর্তমানে বেশ বড় আকারের কদবেল বাজারে দেখতে পাওয়া যায়। এ জাতকে অনেকে “বনলতা” জাত বলে। আজকাল পাঁকা কদবেলের মধ্যে মসলা মাখিয়ে কাঠি ঢুকিয়ে ঘুঁটে তার শাঁস খাওয়ার প্রচলনই বেশী। অনেকে চাটনী বা আচার বানিয়ে খায়।
কদবেলের আছে নানা পুষ্টিগুণ। এতে খাদ্যশক্তি রয়েছে কাঁঠাল ও পেয়ারার প্রায় সমান। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী পুষ্টি উপাদানে রয়েছে খনিজ পদার্থ ২.২ গ্রাম (যা সকল ফল থেকে বেশী); আঁশ- ৫.০ গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৪৯ কিলো ক্যালোরী, আমিষ- ৩.৫ গ্রাম (যা অন্যান্য ফল থেকে বেশী), শর্করা ৮.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ৫৯ মি. গ্রাম, আয়রন- ০.৬ মি. গ্রাম এবং ভিটামিন-এ, বি ও সি রয়েছে যথেষ্ট।
প্রাচীনকাল হতে আয়ুর্বেদ বা ইউনানী শাস্ত্রের চিকিৎসায় কদবেল একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল হিসেবে বিবেচিত এবং ভেষজ গুণে ভরপুর। এর ফল, পাতা, ছাল ও শাঁস ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চাঁদপুরের একজন ফল ব্যবসায়ী আজগর হোসেন। দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ তিনি ফল ব্যবসায় জড়িয়ে আছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আগষ্টের শুরুতেই কদবেল ফল এনেছেন তিনি।
আজগর হোসেন বলেন, খুলনা সাতক্ষীরার বাগান থেকে সরাসরি চাষী কতৃক ক্রয় করে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় আনা হয়। এরপর তাদের মতো মফস্বল অঞ্চলের ব্যাবসায়ীরা ঢাকার সদরঘাট থেকে নিয়ে আসেন।
আজগর খুব উৎসাহ সহকারে বলেন, অন্যান্য ফলের তুলনায় খুবই লাভজনক। ফরমালিনের জগতে এই ফলটিই নির্ভেজাল একটি ফল যেটি তারা বিক্রি করে চলেছেন। শুষ্ক মৌসুমে এর ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে খুবই দুশ্চিন্তার সাথে তিনি জানান, বৃষ্টি হলে তিনভাগের একভাগও পাওয়া যায় না।