মো. খোরশেদ আলম জুয়েল : সারাবিশ্বে বিভিন্ন প্রজাতির মুরগি রয়েছে। আছে তাদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য। এখানে কয়েকটি মুরগির জাত, উৎপত্তি, বৈশিষ্ট্য ও উপযোগিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
আসিল
উৎপত্তিঃ আসিল অর্থাৎ আসল বা খাঁটি। এটি বাংলাদেশের একটি বিশুদ্ধ জাতের

মুরগি। চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানা ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সরাইল থানায় এ জাতের মুরগি পাওয়া যায়।
বৈশিষ্ট্যঃ
১. এদের দেহের গঠন বলিষ্ঠ ও দৃঢ়, গলা ও পা দুটো লম্বা।
২. এদের মাথা বেশ চওড়া এবং মাথায় মটর ঝুঁটি থাকে।
৩. দেহে পালক খুব কম থাকে ও পালকের রঙ লাল হয়।
উপযোগীতাঃ এরা বেশ বড় হয়। এ জাতের মোরগ ভালো লড়াই করতে পারে। তাই অনেকে শখ করে এদের পালন করে থাকে। এদের মাংস খুব সুস্বাদু। প্রাপ্ত মোরগ ও মুরগীর ওজন যথাক্রমে ৪.০ – ৪.৫ এবং ৩.০- ৩.৫ কেজি।
ফাউমি

উৎপত্তিঃ এ জাতের মোরগ-মুরগীর উৎপত্তিস্থল মিশর।
বৈশিষ্ট্যঃ
১. পালকের রং কালো ও সাদা ফোটা ফোটা, ঘাড়ের পালক সাদা।
২. কানের লতি এবং গায়ের চামড়া সাদা।
৩. ডিমের খোসা সাদা।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
উপযোগীতাঃ ডিম উৎপাদনকারী জাত হিসাবে পরিচিত এ জাত আমাদের দেশীয় আবহাওয়ায় পালনের উপযোগী। এদের বার্ষিক গড় ডিম উৎপাদন ১৫০- ২০০ টি।
রোড আইল্যান্ড রেড
উৎপত্তিঃ আমেরিকার রোড আইল্যান্ড রেড নামক স্থানে। সংক্ষেপে এদেরকে আর আই আর বলা হয়।

বৈশিষ্ট্যঃ
১. এদের পালকের রং লাল এবং পাখনা ও লেজের পালকের মাথায় কালো দাগ থাকে।
২. গায়ের চামড়া হলদে এবং কানের লতি আকারে ছোট ও লাল রঙের।
৩. ডিমের খোসার রং বাদামি।
উপযোগীতাঃ মাংস ও ডিম উভয় উদ্দেশ্যেই এ মুরগি পালন করা হয়ে থাকে। পূর্ণ বয়স্ক একটি মোরগের ওজন ৩-৪ কেজি ও মুরগীর ওজন ২.৫- ৩ কেজি। এদের বার্ষিক ডিম উৎপাদন ১৫০- ২০০ টি।
সোনালী
উৎপত্তিঃ আর আই আর জাতের মোরগ-এর সাথে ফাউমি জাতের মুরগীর মিলনে সৃষ্ট জাত।
বৈশিষ্ট্যঃ

১. মোরগের গায়ের রং সোনালীর মধ্যে কালো, পাখায় সাদা ফোটা ফোটা। মুরগীর গায়ের রং হলুদ কালো।
২. আকারে মাঝারি। ডিমের খোসা ক্রিম বর্ণের।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
উপযোগীতাঃ ডিম উৎপাদনকারী জাত হিসাবে পরিচিত এ জাত আমাদের দেশীয় আবহাওয়ায় পালনের উপযোগী। পূর্ণ বয়স্ক একটি মোরগের ওজন ২- ২.৫ কেজি ও মুরগীর ওজন ১.৫- ২ কেজি। এদের বার্ষিক গড় ডিম উৎপাদন ১৫০- ২০০ টি।
হোয়াইট লেগহর্ণ
উৎপত্তিঃ এ মুরগী ভূমধ্যসাগরীয় জাতের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এর উৎপত্তিস্থল ইটালীর লেগহর্ন নামক স্থানে।

বৈশিষ্ট্যঃ
১. পালকের রং এবং কানের লতি সাদা।
২. গায়ের চামড়ার রং হলুদ এবং ডিমের খোসার রং সাদা।
৩. আকারে ছোট ও ওজনে হালকা।
৪.পূর্ণ বয়স্ক মোরগের ওজন ২- ৩ কেজি এবং মুরগীর ওজন ১.৫- ২ কেজি।
৫. ৫/৬ মাস বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে।
উপযোগীতাঃ এ জাতের মুরগী ডিম উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে পরিচিত জাত। বার্ষিক ডিম উৎপাদন ২০০-২৫০টি।
সূত্র: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর