শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

বনজ সম্পদ পাচার রোধে রেড এ্যালার্ট জারি

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): সুন্দরবনের খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের বনজ সম্পদ পাচার রোধসহ যে কোনো ধরনের নাশকতারোধে বন বিভাগের পক্ষ থেকে রেড এ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে মৌসুম টার্গেট করে যাতে কোনোভাবেই পাচারকারী চক্রের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি না পায় সেজন্য এ দু’টি রেঞ্জে বিশেষ সতর্ক ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। আর এ কারণে বনকর্মকর্তাদের ঈদকালীন ছুটি বাতিল করার পাশাপাশি টহল ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বশিরুল-আল মামুন বলেন, খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের ৯টি স্টেশন ও বিভিন্ন ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে যে, পাচাররোধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ বনপ্রহরী ও কর্মকর্তাদের কোনোমতেই ছাড় দেয়া হবে না। ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহ এই রেড এ্যালার্ট বলবৎ থাকবে। তিনি আরও জানান, ঈদকে সামনে রেখে বন থেকে বনজদ্রব্য পাচার ও প্রাণি, বিশেষ করে হরিণ শিকার বৃদ্ধির আশঙ্কায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠকে রেঞ্জ কর্মকর্তা, বন কর্মকর্তা ও বনপ্রহরীদের বনের গহীনে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার বন্ধে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়াসহ টহল ব্যবস্থা জোরদার করার ওপর তাগিদ দেয়া হয়। এ ছাড়া বনে যাতে করে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সুন্দরবনের বিশেষ টিম স্মার্ট খুলনা রেঞ্জের টিম লিডার মো. সুলতান মাহমুদ টিটু বলেন, ঈদ উপলক্ষে সার্বক্ষণিক তাদের টহল কার্যক্রম চলমান থাকবে।

বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সুন্দরবনের হরিণ শিকার, বৈধভাবে গাছ কাটা এবং জেলেদের কাছ থেকে বনদস্যুদের চাঁদা আদায় রোধে শনিবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১১টায় খুলনা রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশেষ বিশেষ টিম গঠন করে টহল জোরদারসহ প্রত্যেক স্টেশন কর্মকর্তার সমন্বয়ে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এস এম শোয়াইব খানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বানিয়াখালী স্টেশন কর্মকর্তা মো. ওবাইদুল্যাহ, কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদ টিটু, কালাবগি স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায়, নলিয়ান স্টেশন কর্মকর্তা মো. মকরুল হোসেন আকন, সুতারখালি স্টেশন কর্মকর্তা শফিউল আলমসহ বিভিন্ন টহল ফাঁড়ির কর্মরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, ঈদকে সামনে রেখে সুন্দরবনে এক শ্রেণীর চোরাকারবারী এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সুন্দরবনের কাঠ পাচার করে আর্থিক ফায়দা লুটে থাকে। এছাড়া এক শ্রেণীর অসাধু শিকারী চক্র মায়াবি হরিণ নিধনযজ্ঞে মেতে ওঠে। এ বছর এই সুযোগ যাতে কাজে না লাগাতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে বন বিভাগ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তার বলয়।

বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা মো. কবির উদ্দিন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে তার অধীনস্থ এলাকায় টহল কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. শোইয়েব খান বলেন, ইতোমধ্যে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বিভিন্ন স্টেশন ও টহল ফাঁড়িতে কর্মরত বন বিভাগের স্টাফদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে টহল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। তাছাড়া বিশেষ টিমের পাশাপাশি রাত-দিন বিভিন্ন স্টেশন ও টহল ফাঁড়ি সমন্বয়ে গঠিত টিম সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় টহল কার্যক্রম চালাবে বলে তিনি জানান।

This post has already been read 3600 times!

Check Also

ভেটেরিনারি ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব) এর বিক্ষোভ সমাবেশ

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামলীগের বিদায়ের তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে …