ডা. মো. লিপন তালুকদার: আর মাত্র দুই দিন, সবাই কোরবানির পশু ক্রয় করছেন, অনেক আদর যত্ন করছেন, তবে আপনার কোরবানির পশু যেন অসুস্থ না হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, কারণ অসুস্থ পশুকে কোরবানি দেয়া যায় না।
কোরবানির পশু ক্রয় এর পর সতর্কতা ও করনীয়:
১. গন্তব্যস্থান দূরে হলে গবাদিপ্রাণিকে হাঁটিয়ে নিবেন না, যানবাহনে (ট্রাক বা মিনিট্রাকে) পরিবহন করুন। এতে ধকল কম হবে। গরম বেশি হলে হিট স্ট্রোকে মৃত্যুও হতে পারে।
২. বাড়িতে আনার পর সাথে সাথেই খাবার/পানি দিবেন না।
৩. বাড়িতে আনার পর ১৫-৩০ মিনিট সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে দিন। তারপর নলকূপের স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি খেতে দিন, সাথে অল্প পরিমাণ খাদ্য দিতে পারেন।
৪.সব থেকে যেটা বড় ভুল করেন সেটা হলো অতি উৎসাহের কারণে গবাদি প্রাণিকে ভাত, জাউ, খুদের ভাত খেতে দেয়া৷ এতে কোরবানির প্রাণিটির ব্লট বা পেটফুলা হতে পারে, এসিডোসিস হতে পারে, এমনকি মারা যেতে পারে।
৫. কোরবানির প্রাণির সামনে সবসময় পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি রাখুন।
৬. গরুর ক্ষেত্রে দানাদার খাদ্যের হিসাব (প্রতিদিনের জন্য /২৪ ঘন্টার জন্য) ক)১০০ কেজি ওজনের জন্য বা কাছকাছি: খড় : ১-১.৫ কেজি দানাদার খাদ্য : ২-২.৫ কেজি ঘাস : ৩-৪ কেজি খ) ১০০-১৫০ কেজি ওজনের জন্য : খড়: ২-২.৫ কেজি দানাদার খাদ্য: ৩-৩.৫ কেজি ঘাস: ৫-৬ কেজি গ) ১৫০-২০০ কেজি বা তার বেশি: খড় : ৩-৪ কেজি দানাদার খাদ্য : ৫-৫.৫ কেজি ঘাস : ৮ কেজি এর বেশি না দেয়াই উত্তম।
৭.ছাগলের ক্ষেত্রে: -কাঁচা ঘাস: পর্যাপ্ত পরিমাণ -দানাদার খাদ্য: ০.৫-১ কেজি প্রতিদিন -কাঁঠাল পাতা,কলার পাতা,কলার খোসা।
প্রতি কেজি দানাদার খাদ্যের মিশ্রণের নমুনা: ক) গমের ভূষি ৩০০ গ্রাম খ) চালের কুড়া ২৫০ গ্রাম গ) ছোলার ভূষি ২৫০ গ্রাম ঘ) সরিষার খৈল ১৮০ গ্রাম ঙ) লবণ ২০ গ্রাম -মোট ১ কেজি।
গরম থেকে বাঁচাতে প্রাণীর ঘরে সিলিং ফ্যান বা স্ট্যান্ড ফ্যানের ব্যাবস্থা রাখুন। এমন জায়গাতে প্রাণীটিকে রাখুন, যেন পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায়। প্রাণীটিকে নিয়মিত (প্রতিদিন সকালে) গোসল করান। যেকোন সমস্যায় একজন রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।