শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর, ইলিশে ভরপুর

মাহফুজুর রহমান: ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। রূপালি ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর। এটা সবার জানা আছে। গোলাকার এই পৃথিবীতে যেখানেই বাংলা ভাষাভাষী বসবাস করছে, সেখানেই ইলিশের চাহিদা রয়েছে। ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করতে অপেক্ষায় থাকে সবাই। যদিও বাজার ভরে আছে নানা প্রজাতির কত শত রকমের মাছ।

তবুও মুখের স্বাদ মনের চাওয়া একমাত্র ইলিশ। সেজন্যে ইলিশের বাড়ি শুধু চাঁদপুরে সীমাবদ্ধ নয়। ইলিশের বাড়ি বিশ্বজুড়ে। এখন ইলিশের ভরা মৌসুমে খোদ রাজধানীতেই ঝাঁকাভর্তি ইলিশ ফেরি করে বিক্রি হয়। অমৌসুমেও বিক্রি হয়। বাজারে ইলিশ সহজপ্রাপ্য।

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় জেলেদের জালে তেমন ইলিশ ধরা না পড়লেও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর নদীতে। ওইসব মাছ ট্রলার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে নিয়ে আসা হচ্ছে চাঁদপুর বড়স্টেশন রফতানি কেন্দ্রে। এখান থেকে মাছগুলো বাক্স ভর্তি হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হচ্ছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাছের আড়ৎ চাঁদপুর বড়স্টেশনে গত দু’সপ্তাহ যাবৎ ইলিশের এ আমদানি হচ্ছে। আর ইলিশের এ আমদানি-রফতানিতে স্বস্তি ফিরে এসেছে আড়ৎ মালিকদের মাঝে।

চাঁদপুর নদ-নদী ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, চরফ্যাশন, দৌলতপুর, দক্ষিণ হাতিয়া, সন্দিপ, নিঝুমদ্বীপ, রামগঞ্জ, শরীয়তপুর ও নোয়াখালী এলাকা থেকে চাঁদপুর মাছঘাটে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ আসছে। এর ফলে চাঁদপুর মাছ ঘাটে ব্যাপক হারে ইলিশের দেখা মিলছে।

চাঁদপুর মাছ ঘাটে গত দুই সপ্তাহ যাবৎ গড়ে প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই হাজার মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে। তবে গত দু’দিন ধরে কিছুটা কমে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দেড় হাজার মণে।

এদিকে চাঁদপুরে ইলিশ আমদানির কারণে জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী, দাদন ব্যবসায়ীসহ শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। এতে মৎস্য আড়ৎদারদের মাঝেও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

নিঝুম দ্বীপ থেকে মাছ নিয়ে আসা একজন জেলে জানান, সাগর থেকে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

হাতিয়ার জাহাজমারার এক জেলে জানান, এখন জো চলছে। এই সময়টিতে ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। সামনে আরো বেশি ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে চাঁদপুর মাছ ঘাটের মৎস ব্যাবসায়ী বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া জানান, দুই সপ্তাহ ইলিশের আমদানি ভালো থাকলেও গত দু’দিন এর পরিমাণ কিছুটা কমে এসেছে। এর ফলে দামও বেড়েছে।

তিনি জানান, ঈদের আগে ইলিশের দাম কমার সম্ভাবনা কম। তবে কয়েকদিন পর আরো একটি জো রয়েছে সেই জোতে ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন দাম আরো কমে যাবে।

চাঁদপুরের রুপালী ইলিশের দাম একটু বেশিই। মাছঘাট সূত্রে জানা যায়, চলতি সময়ে বাজারে এখন ১২শ গ্রামের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০ হাজার টাকায় যার প্রতি কেজির মূল্য ১ হাজার টাকা, ৭শ থেকে ৮শ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২৭ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকায় যার প্রতি কেজির মূল্য ৭শত টাকা, ৫শ থেকে ৬শ গ্রাম ইলিশ প্রতি মণ ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায় যার প্রতি কেজির দাম ৫শ থেকে ৬ শ টাকা। এছাড়া ছোট সাইজের ইলিশ ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা কেজি দরে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

This post has already been read 3916 times!

Check Also

যে জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়, ওই জেলার মানুষ গরিব হতে পারে না -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ভোলা সংবাদদাতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশের সম্পদ রক্ষায় সবাইকে একসাথে কাজ …