মাহফুজুর রহমান (চাঁদপুর প্রতিনিধি): ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর বলেই সকলেই কমবেশি জানি। তবুও চাঁদপুরবাসী যেন ইলিশ কেনা নিয়ে বিপাকেই পড়েছেন। ঈদের পরপরই চাঁদপুর মাছঘাটে রূপালি ইলিশের আমদানি কিছুটা বেড়েছে। তবে মাছের আমদানি বাড়লেও সাধারণ ক্রেতারা খুশি নন, হতাশ অনেকেই। তবে ইলিশের পাগলা ভক্ততগন মোটা অঙ্কে ইলিশ কিনেই একপ্রকার স্বাদ মিটিয়ে চলেছেন।
অাড়ৎগুলোতে মাছে ভরপুর হলেও দাম কিন্তু কমছে না। আড়তেই মোটামুটি সাইজের ইলিশের মূল্য যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। খুচরা বাজারে এর দাম আরও বেশি বলে ক্রেতারা জানান।
তবে খুচরা বাজার থেকে অাড়তে মাছের দাম একটু বেশি বলে জানান ইলিশ বিক্রেতা শরীফ মিয়া। তিনি বলেন, “অামগো অাড়তে খাঁটি চাঁদপুরের ইলিশই বেশি পাবেন, অন্যান্যতে খুচরা বাজারে ইলিশ এলোমেলো হইয়া যায়, ঐদিকে সাগরের ইলিশ, চাঁদপুর কইয়া চালাইয়া দেয়। অার অামগো অাড়তে এহন মোটামুটি ছোট সাইজের ইলিশ ৭৫০-৮০০ টাকা,মাঝারী সাইজের ১৩০০-১৬০০ টাকা, অার বড়গুলো ২৪০০ বা তারও বেশি দামে বেছতাছি।
ঘাটের মাছ সব চালানীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে এবং প্যাকেজিং করে যার যার মোকামে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
সরজমিনে দেখা যায়, প্যাকেজিং করা ইলিশগুলো সিলসহ গাড়িতে উঠানো হচ্ছে। ঐদিকের এক কর্মচারী জানান, এগুলো পার্শবর্তী দেশ ভারত সহ বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানির জন্য যাচ্ছে। ঘাটে ইলিশ অাসতে না অাসতেই সিংহভাগ ইলিশই প্যাকেজিং অার সিল দেয়া শুরু হয়।
ইলিশ বোঝাই অনেকগুলো ট্রলারও ঘাটে স্থির। হাজী আব্দুল মালেক খন্দকার, হাজী শবে বরাত সরকারসক কয়েকজনের আড়তের এসব ট্রলার। অল্প অল্প করে মাছ বিক্রির জন্যে আড়তে তোলা হচ্ছে। চাঁদপুর ঘাটে আসা এসব মাছ হাতিয়া সাগর এলাকার বলে জানা যায়।
হাতিয়ার জাহাজমারা মা-২ ফিশিং ট্রলার মালিক ফজলুল করিম (৬০) ও হাতিয়ার রহমতবাজারের ইলিশের বেপারী মোস্তাফিজ (৫০) জানান, গত বছর এ সময় আমরা সাগরে একটানা মাছ পাইছি, এবার তা কম। গ্যাপে গ্যাপে কিছু মাছ পাচ্ছি। ঈদের আগে কিছু আর ঈদের পর গত কদিন কিছু ইলিশ পাইছি বলে চাঁদপুরে নিয়ে এসেছি।’
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সদস্য ও ইলিশ ব্যবসায়ী হাজী আনোয়ার হোসেন গাজী জানান, ভারত থেকে এখন ইলিশ বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। আমাদের নদীতে মাছ নাই অথচ ভারত সাগরে তারা এবার প্রচুর ইলিশ পাচ্ছে। ভারতের দীঘা, ডায়মন্ডহার্বার ও উড়িষ্যা সাগর এবং নদী এলাকায় ওই দেশের জেলেদের জালে ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়ছে। সাতক্ষীরা বর্ডারে ৪/৫শ’ গ্রাম আকারের ইলিশ সেখানে ১শ’ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা, ঈশ্বর্দী ও খুলনায় ভারতের ইলিশ পাওয়া যায়। এ কারণে চাঁদপুরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির পরিচালক আঃ খালেক বেপারী জানান, স্থানীয় নদীতে মাছ প্রায় নেই, সব এখন হাতিয়ার মাছ।