রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

পণ্যের স্বচ্ছতা যাচাইয়ে নাফকো’র ”০৯ ৬১১ ৬১২ ৬১৩” সেবা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভেজাল। বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত, সমালোচিত এবং বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ। খাদ্যে ভেজাল, রাস্তায় ভেজাল, পানিতে ভেজাল, এমনকি গাছ-গাছালি ফল ফলাদি সবকিছুতেই ভেজাল। মোদ্দা কথা, ভেজাল বিষয়টি প্রতিটি বাঙালীর জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে! এতসব ভেজালের ভীড়ে সার, কীটনাশক কিংবা হরমোন সেগুলোইবা বাদ যাবে কেন? ভেজাল কারবারীদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ যেমন অতিষ্ঠ তেমনি আসল কারবারীরা সবসময় থাকেন আতঙ্কে। কারণ, বেশিরভাগ মানুষ এখন আসলটাকেও ভেজাল হিসেবে সন্দেহ করেন, ভেজালটাকেও  ভেজাল সন্দেহ করেন। এতকিছুর পরও অনেক ব্যবসায়ী চেষ্টা করছেন তাদের বাজারজাতকৃত পণ্যটির ব্যাপারে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে। এক্ষেত্রে একেকজনের টেকনিক হয়তো একেক রকম।

বাংলাদেশের কৃষি জগতের স্বনামধন্য কোম্পানি নাফকো (প্রা.) ভেজালের ভীরে তাদের বাজারজাতকৃত আসল পণ্য কৃষকরা যাতে সহজেই যাচাই করতে পারেন সেজন্য নিয়েছে সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম এক উদ্যোগ। তাদের পণ্যের সঠিকতা নিরুপেনের জন্য ‘স্বচ্ছতা’ নামে একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে কোম্পানিটি। এর ফলে কৃষক এবং ক্রেতা সাধারণ সহজেই জানতে পারবেন ক্রয়কৃত পণ্যটি আসলেই নাফকো’র কী না! তাদের উদ্ভাবিত প্রকল্পটি ব্যাতিক্রম এ কারণেই যে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কল সেন্টারের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য কল করা হলে সাধারণত গ্রাহকের মোবাইল থেকে ব্যালেন্স কেটে নেয়া হয়। কিন্তু নাফকো’র স্বচ্ছতা প্রকল্পের আওতায় যদি কোন গ্রাহক ”০৯ ৬১১ ৬১২ ৬১৩” নাম্বারে কল দেয় সেই কলটি তখন রিসিভ না হয়ে মিসড কল হিসেবে রেকর্ড হবে এবং পরমুহূর্তে সেই গ্রাহক কিংবা কৃষককে নাফকো থেকে কল ব্যাক করা হবে। এর ফলে পণ্যটির সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য খুব স্বাভাবিকভাবেই গ্রাহকের এক পয়সাও খরচ হবেনা।

কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, ‘স্বচ্ছতা’র মাধ্যমে উৎপাদন হতে ভোক্তার নিকট পণ্যের গুণগত মানের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত করা হবে। ‘স্বচ্ছতা’র অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি পণ্যের গায়ে একটি ৯ সংখ্যার ইউনিক কোড দেয়া থাকবে। যখন কোন গ্রাহক দোকান থেকে উক্ত পণ্যটি ক্রয় করবেন তখন গ্রাহক চাইলে ”০৯ ৬১১ ৬১২ ৬১৩” নাম্বারে ফোন করে পণ্যের গায়ের ৯ সংখ্যার ইউনিক কোডটি শুধু বলবেন এবং সাথে সাথেই গ্রাহককে কম্পিউটার চেকিংয়ের মাধ্যমে পণ্যটির আসল/ নকল নিশ্চিত করা হবে। এভাবেই ‘স্বচ্ছতা’র মাধ্যমে নাফকোর পণ্য যাচাইকরণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।

এ সম্পর্কে নাফকো (প্রা.) লিমিটেড –এর মহাব্যবস্থাপক সুবীর চৌধুরী এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, আমাদের কৃষকরা অহরহ প্রতারিত হচ্ছেন। বিভিন্ন ভেজাল পণ্য ক্রয়ের মাধ্যমে তারা যেমন প্রতারিত হচ্ছেন তেমনি যারা ভালো পণ্য বিক্রি করেন তারাও ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা জানেননা, কীভাবে আসল পণ্য যাচাই করতে হবে। সেজন্য আমাদের আসল পণ্য যাচাইয়ে কৃষককে এটি  একটি টুলস হিসেবে দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের কৃষকদের জন্য প্রচলিত কল সেন্টার পদ্ধতিটি খুব একটা কার্যকর নয়। কারণ, গাটের পয়সা খরচ করে কৃষকরা সহজে কল করতে চাননা। কৃষকের যাতে এক পয়সাও খরচ না হয় বিষয়টিকে মাথায় রেখেই আমরা প্রকল্পটি হাতে নিয়েছি। যদিও প্রকল্পটি ব্যায়বহুল তবুও চাই কৃষকরা বিনামূল্যে ‘স্বচ্ছতা’ সেবাটি যাতে পেতে পারেন।

প্রাথমিকভাবে লিটোসেন (উদ্ভিদের জৈব উদ্দীপক) এবং সপসিন -৭৫ ডব্লিউপি (কীটনাশক) নামে দুটি পণ্যের জন্য এ সেবা দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো পণ্যই এ সেবার অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে তিনি জানান।

This post has already been read 6253 times!

Check Also

বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতে কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে -কৃষি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন,  বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন …