মো. খোরশেদ আলম জুয়েল : দেশে প্রথমবারের মতো উদ্ভাবিত হাইব্রিড পেঁয়াজ বাজারে নিয়ে আসছে দেশের কৃষি সেক্টরের স্বনামখ্যাত কোম্পানি লাল তীর সীড লিমিটেড। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই প্রথম নিজস্ব উদ্ভাবিত হাইব্রিড পেঁয়াজ। পেঁয়াজটি বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ায় চাষোপযোগী। “লালতীর হাইব্রিড পেঁয়াজ বীজ” নামে নতুন উদ্ভাবিত হাইব্রিড পেঁয়াজটি বাজারজাত করা হবে।
জানা যায়, প্রায় ১০ বছরের নিরলস গবেষণা ও পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর লাল তীরের বৈজ্ঞানিক ও প্রজননবিদদের অক্লান্ত চেষ্টায় উদ্ভাবিত নতুন এ পেঁয়াজের হাইব্রিড বীজ এ বছরই প্রথমবারের মতো বাজারে ছাড়া হবে। বীজ উৎপাদনে দেশের বেসরকারি খাতে প্রথম গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান লাল তীর সীড লিমিটেড এই উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবী করেছে।
নতুন উদ্ভাবিত হাইব্রিড পেঁয়াজের ফলন ও বিশেষ গুণ সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটি এগ্রিনিউজ২৪.কম কে জানিয়েছে, স্থানীয় জাতের তুলনায় এটি প্রায় ৩ গুণ অধিক ফলনশীল। একরপ্রতি ফলন প্রায় ১২ টন। প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন হবে প্রায় ৫০–৬০ গ্রাম। চ্যাপ্টা গোলাকৃতির পেঁয়াজের রঙ আকর্ষণীয় উজ্জ্বল তাম্রবর্ণের দেশী তাহেরপুরী পেঁয়াজের ন্যায় কড়া ঝাঁজ ও স্বাদ।
এছাড়াও প্রতিটি পেঁয়াজের রঙ ও আকৃতি অভিন্ন। এক কন্দ বিশিষ্ট এ পেঁয়াজ প্রায় সারা বছর সংরক্ষণ উপযোগী বিধায় অধিক মূল্যে বিক্রয়যোগ্য ও সংরক্ষণকালীন ওজন হ্রাস অতি নগণ্য বলে লাল তীর সীড দাবী করেছে।
নতুন উদ্ভাবিত পেঁয়াজটি সম্পর্কে লাল তীর সীডস লিমিটেড –এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব আনাম এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সারা বছর জুড়ে পেঁয়াজের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লাল তীর সীড লিমিটেড বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ায় চাষোপযোগী হাইব্রিড পেঁয়াজের জাত (লালতীর হাইব্রিড পেঁয়াজ বীজ) উদ্ভাবন করেছে যা সারা বছর সংরক্ষণযোগ্য।
তিনি আরো বলেন, যদি দেশের পেঁয়াজ চাষে ব্যবহৃত জমির শতকরা ৩০ ভাগও লালতীর হাইব্রিড পেঁয়াজ বীজের এর আওতায় আসে তাহলে দেশের বাৎসরিক পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়াবে ২৭ লাখ টন। যা দেশের সর্বমোট বর্তমান বার্ষিক উৎপাদনের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেশি। ফলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা সম্পূর্ণ মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি কৃষকসহ ও পেঁয়াজ উৎপাদন ও বিপননে জড়িত বিপুল জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক তথা সামগ্রীক জীবনযাত্রার মান উন্নয়ণে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
এছাড়াও লাল তীর হাইব্রিড চাষে পেঁয়াজ চাষিদের একরপ্রতি স্থানীয় জাতের পেঁয়াজের বীজ যেখানে একরপ্রতি ৬ কেজি লাগে সেখানে উদ্ভাবিত হাইব্রিড পেঁয়াজ লাগবে ৩ কেজি। স্থানীয় জাতের পেঁয়াজের অঙ্কুরোদ্গম ক্ষমতা শতকরা ৪০–৫০ ভাগ সেখানে লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা ৮০ ভাগ বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবী করেছে।