ফকির শহিদুল ইসলাম(খুলনা): নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকারকে আরো সুসংহত করতে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। বিশ্বমানের এ আইন বাস্তবায়নে ১৮টি মন্ত্রণালয় যুক্ত আছে। শুধু জেল-জরিমানা নয়, সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা যেতে পারে। খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম, এম.পি, রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ বাস্তবায়নে জনসচেতনতা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, উৎপাদন, আমদানি, মজুদ, বিপনন থেকে পরিবেশন পর্যন্ত খাদ্যকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে কীটনাশক এর সহনীয় ব্যবহার এবং বিপনন পর্যায়ে ফরমালিন, কার্বাইড ও রাসায়নিক অপদ্রব্য ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। পরিবারের সদস্যদের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি গৃহপরিচারিকাদের পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও যত্নশীল হওয়া আবশ্যক।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ১৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিলো। দেশ আজ খাদ্যে স্বনির্ভর। নেপালের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বাংলাদেশ খাদ্য সহায়তা পাঠিয়েছে। নিকট অতীতে বাংলাদেশ শ্রীলংকায় খাদ্যশস্য রফতানি করেছে।
বর্তমানে দেশে হতদরিদ্র্যের হার ১২ শতাংশের নিচে এবং দেশের ৫০ লাখ পরিবার বছরে পাঁচ মাস ১০টাকা কেজি দরে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল পায়। এক্ষেত্রে পুষ্টি চালের বিষয়টি যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। দেশ আজ বিদেশ নির্ভর বাজেটের পরিবর্তে স্বনির্ভর বাজেট প্রণায়নের পথে হাঁটছে। মন্ত্রী বলেন, খাদ্য ঘাটতি আমরা কাটিয়ে উঠেছি, এখন খাদ্যকে নিরাপদ করাই হবে আমাদের লক্ষ্য।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াদুদ, সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন এবং পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ।
এতে সভাপতিত্ব করেন, খুলনার জেলা প্রশাসক ও জেলা নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক আহমেদ এবং মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর কবির। অনুষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর ওপর তথ্য সমৃদ্ধ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করা হয়।
কর্মশালায় উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে। এর আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শহীদ হাদিস পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও খুলনা জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।