নিজস্ব প্রতিবেদক: নবনব প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং নিরাপদ আমিষের উৎপাদন নিশ্চিত করতে প্রাণিখাতের গবেষণা কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে। সরকারও স্বল্প জায়গায় অধিক নিরাপদ আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধি লক্ষ্যে দেশে অঞ্চলভিত্তিক সমস্যা নিরুপন করে নতুন-নতুন গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে যা অত্যন্ত জরুরি। মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) সাভারস্থ বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (BLRI) এর মিলনায়তনে ৮ ও ৯ অক্টোবর ২দিনব্যাপী “BLRI এর বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা ওয়ার্কশপ-২০১৮” এ উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় তাঁরা মাঠ পর্যায়ে প্রযুক্তির বাস্তবায়নে ধীর গতিতে অসন্তোষ প্রকাশ এবং BLRI এর আঞ্চলিক কার্যালয়-স্থাপনের প্রয়োজনের ওপর গুরুত্বারপ করেন। এতে সারাদেশ থেকে প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন, রোগনিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যসম্মত আমিষের উৎপাদনে গবেষণায় জড়িত বিজ্ঞানী, গবেষক, কৃষি ভার্সিটির শিক্ষক, প্রাণিসম্পদ-কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধিসহ ৩ শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন।
বক্তারা আরো বলেন, সুন্দরবনসহ উপকূলীয় অঞ্চলে পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার অপর জোর দিয়ে বলেন, সরকারের “BDP ২১০০” মেঘা প্রকল্পটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে, যা বর্তমান সরকারের দুরদর্শিতার প্রমাণ। তারা মৎস্যখাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, ইলিশের ব্যাপক উৎপাদন ও সহজলভ্যতার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সরকারের প্রশংসা করেন। তারা দেশের চিংড়ি উৎপাদনে মন্দাভাব এবং চিংড়ির রপ্তানি আয় কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
BLRI এর ডিজি নাথু রাম সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধন করেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এম.পি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ডা. এনামুর রহমান এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ-মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC) এর নির্বাহীএ চেয়ারম্যান ড. কবির ইকরামুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, প্রাণিখাতের মাধ্যমে বর্তমানে ২০% মানুষের প্রত্যক্ষ এবং ৫০% লোকের পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণিখাতের উন্নয়নে ৭টি প্রযুক্তি ও ৮৩টি প্রযুক্তি-প্যাকেজ উদ্ভাবিত হয়েছে। সরকারের উৎসাহে এখন শহর-গ্রামে খামার ও পশুপালনের হার বাড়ছে বলেই দেশ মাংশে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ফলে বিগত ৫ বছরে সাড়ে ৩৪ হাজার টন থেকে বেড়ে প্রায় ৯৫ লাখ টন, মাংসের উৎপাদন সাড়ে ২৩ লাখ টন থেকে সাড়ে ৭২ হাজার টন এবং ডিমের উৎপাদন-সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭কোটি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ১৫ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
উল্লেখ্য, দু’দিনব্যাপী কর্মশালায় গত বছরের গবেষণা কার্যক্রম, তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে কর্মরত বিশেজ্ঞদের বাস্তব অভিজ্ঞতার পর্যালোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সমস্যা-সমাধানে পলিসি-মেকারদের দৃষ্টি-আকর্ষণ করে সুপারিশমালা প্রণনয়ন করা হবে। এ লক্ষ্যে দু’দিনে মোট ৬২টি গবেষণা-প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ৩৫টি প্রবন্ধাকারে এবং ২৭টির পোস্টারভিত্তিক উপস্থাপনা করা হবে।