ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): বাগেরহাট জেলার শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী এলাকায় মঙ্গলবার ভোর রাতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩৫/১ পোল্ডারের নির্মাণাধীন উপকূলীয় বেরীবাধের (সিইআইপি প্রকল্প) প্রায় ২০০ মিটার অংশ বাধ ভেঙে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিন শতাধিক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পাঁচ শতাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। প্রায় ৫শত জমির আমন ক্ষেত বিনষ্টের আশংকা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দু’দিন আগে থেকেই অল্প অল্প করে বাঁধ ভাংতে থাকে। মঙ্গলবার ভোর রাতে বলেশ্বর নদীর জোয়ারের তোড়ে বিরাট অংশ জুড়ে বেরীবাধ ভেঙ্গে ৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বগী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম মুন্সী (৬৫) জানান, ব্যাংক থেকে তিনি লাখ টাকা লোন নিয়ে আমনের চাষ করেছেন। বাধ ভেঙে তাঁর সব শেষ হয়ে গেছে। চাষী জাকারিয়া (৩৫), আফজাল তালুকদার, কামাল পঞ্চায়েত (৩৮) জানান, বাধ ভেঙে বগী, বগী দশ ঘর ও বগী সাত ঘর গ্রামের প্রায় ৫০০ একর জমির আমন ক্ষেত পানির সাথে ভেসে আসা কচুড়িপানায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ছে। ভেসে গেছে পাঁচ শতাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ । জোয়ারের পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় দুপুরে বহু পরিবারে রান্না-বান্না হয়নি।
সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বাধ ভেঙে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাতের জোয়ারে আারো পানির চাপ বেশি হবে। বগী থেকে গাবতলা আশার আলো মসজিদ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার বাধের অন্তত ১০টি পয়েন্ট মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসী।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বলেন, বেরীবাধ ভাঙ্গনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সিইআইপি প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এখনও নিরুপণ করা হয়নি।
সিইআইপি প্রকল্পের স্থানীয় প্রকৌশলী শ্যামল দত্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার সময় মোবাইল ফোনে বলেন, ভাঙন এলাকায় রিংবাধ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।