নিজস্ব প্রতিবেদক : কারো বাবা বিছানায় শয্যাশায়ী, কারো দিনে তিনবেলা খাবার জুটেনি ঠিকমতো, কারো আবার থাকার ঘরটা পর্যন্ত ছিলনা, কারো গ্রামে হেটে হেটে মনোহরি ব্যবসা করতেন, কারো বাবা পিয়ন, কেউবা কাগজ কলম কেনার টাকাটা পর্যন্ত ছিলনা, একবার খেয়ে না খেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া এ রকম বহু শিক্ষার্থীর সংগ্রাম ও হৃদয়স্পর্শী গল্প শোনা গেল মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর এসিআই সেন্টারে আয়োজিত ‘হোপস্ বার্ষিক সাধারণ সভা ও বৃত্তি প্রদান’ অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে হোপস -এর সাধারণ সম্পাদক এবং প্যারাগন গ্রুপের পরিচালক ইয়াসমিন রহমান বলেন, আমরা প্রতি বছরই মেধাবী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করি এবং তাদেরকে স্কলারশিপ দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকি। বিগত প্রায় ২৩ বছর ধরে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী যারা অর্থনৈতিক কারণে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে সক্ষম না, তাদেরকে সহযোগীতা করার জন্য হোপস এ ধরনের আয়োজন করে আসছে। আমরা এ ধারা অব্যহত রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরো বেশি শিক্ষার্থীদের এ বৃত্তির আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
হোপস এর সভাপতি এবং হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য প্রফেসর ড. এম. আফজাল হোসেন বলেন, কর্মজীবনে যেয়ে বর্তমানের কস্টটাকে মনে রেখে সৎ থাকার চেষ্টা করবে।
হোপস এর সাবেক সভাপতি এবং প্যারাগন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মসিউর রহমান বলেন, হোপস স্কলারদেরকে ভবিষ্যতে সংগঠনের কান্ডারির দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা চাই তোমাদের মধ্যে থেকে আস্তে আস্তে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসুক। আজকে তোমরা যারা হোপস্ স্কলার তারাই যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মকে সাহায্য করতে পারো সেভাবে কাজ করতে হবে।
এসিআই লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সংগঠনের সদস্য ড. এফএইচ আনসারী বলেন, হোপস এর বৃত্তি পাওয়া রীতিমতো গর্বের বিষয়। কারণ এখানে প্রকৃত মেধাবীদের বৃত্তি দেয়া হয়। এসিআই আজীবন হোপস্ এর পাশে থাকতে চায়।
বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান সারাদেশ থেকে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থীসহ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ ড. রওশন আরা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. গোলাম রাব্বানী, প্রফেসর ড.নূর মোহাম্মদ তালুকদার, আরমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, সোনিয়া লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনায়েত উদ্দিন মো. কায়সার খান, বারি’র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. সোহেলা আখতার ছাড়াও সংগঠনের অন্যান্য সদস্যগণ এবং সাবেক স্কলার।
উল্লেখ্য, (HOPES-Helping Organization for Promising and Energetic Students) মূলত অরাজনৈতিক এবং অলাভজনক একটি সংগঠন যার কাজ হলো সমাজের আর্থিক সুবিধাবঞ্চিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারী কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করা।