নিজস্ব প্রতিবেদক: বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শুরু হবে আন্তর্জাতিক ফুল প্রদর্শনী ও কনফারেন্স-২০১৮। তিন দিনব্যাপী উক্ত প্রদর্শনী চলবে শনিবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় পর্যন্ত। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলের ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে (ডিসিসিআই) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ডিসিসিআই ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) আয়োজিত মেলায় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এজন্য কোনো প্রবেশ ফি লাগবে না।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম খান বলেন, ফুল শিল্পকে প্রসারিত করতে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলার মাধ্যমে সরকার ও ফুল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সংগঠন সবাইকে এক ছাদের আনার চেষ্টা হচ্ছে। এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি মোট ৭০টি স্টল স্থান পাবে। এর মধ্যে ভারত, নেপাল ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ১২টি স্টল থাকবে। এছাড়া প্রদর্শনীতে ফুল উৎপাদন-বিক্রি, ফুল শিল্পের সুযোগ-সুবিধা এবং ভবিষৎ ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে একাধিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশ-বিদেশি ব্যক্তিরা আলোচনায় অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন,বাংলাদেশে ফুল চাষ এখনো ছোট-মাঝারি কৃষকদের মাঝে সীমাবদ্ধ। অথচ দেশে দিনকে দিন ফুলের চাহিদা বাড়ছে। ফলে বাড়তি ফুল আমাদের আমদানি করতে হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ফুল বানিজ্য হয়। বেসরকারি বড় বড় উদ্যোক্তারা যদি এ খাতে এগিয়ে আসেন তবে খুব শীঘ্রই এটি কয়েক হাজার কোটি টাকার ঘরে পৌঁছবে। তবে এজন্য যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো দূর করতে হবে। উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করার জন্য কার্যকর নীতিমালা ও ব্যাংক ঋণ প্রাপ্যতা সহজ করতে হবে।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ারস সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, বর্তমানে দেশের ২৫টি জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদন হয়। ফুল চাষ কৃষির একটি অংশ হলেও চাষিরা এক্ষেত্রে কৃষিভিত্তিক পায়না, তারা ঋণ পায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে। ফুল চাষিদের কৃষিভিত্তিক ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে বিশ্বে ৪৫ বিলিয়ন ডলার ফুলের বাজার রয়েছে। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ফুলের বাজারের পরিমাণ ৯ হাজার কোটি টাকা। চীনের অবদান আরো বেশি। আর সেখানে বাংলাদেশের ফুলের বাজার ৮শ’ কোটি থেকে ১২শ’কোটি টাকার। তার মধ্যে বর্তমানে ৮৪ কোটি টাকার রফতানি হচ্ছে। ২০১৮ সালে বিদেশি রফতানির টার্গেট ২শ’ কোটি টাকা।
বাংলাদেশে ১৬ হাজার কৃষক ফুল চাষ করছে। এ শিল্পে এখন পরোক্ষ-প্রত্যক্ষভাবে ৩০ লাখ জড়িত। এ খাতে যত উৎপাদন বাড়বে। ফুল ততই বিদেশে রফতানি হবে, তাতে কর্মসংস্থানও বাড়বে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম, ইমরান আহমেদ প্রমুখ।