ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পেঁপে চাষে উৎসাহ বাড়ছে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘেরের পাড় ও পতিত জমিতে পেঁপে চাষীদের। অনেক কৃষক পরিবার রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এদের মধ্যে শুভদিয়া ইউনিয়নের ঘনশ্যামপুর গ্রামের মো. মমতাজ উদ্দিন শেখের ছেলে পেপে চাষী মো. মনিরুজ্জামান শেখ অন্যতম। উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে মো. মনিরুজ্জামান শেখ বলেন, দো-আঁশ মাটিতে ও উচু জমিতে পেঁপে চাষ করা সম্ভব এবং এতে রোগ বালাইও তুলনামূলক ভাবে কম হয়। তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক ঘেরের পাড়ে অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকা প্রায় দুই একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষে উৎসাহিত হন। এরপর তিনি দেড় একর জমিতে প্রায় ১৫০০ পেঁপে গাছ রোপন করেন। তাছাড়া তিনি মাদা পদ্ধতিতে এপ্রিল এর প্রথম সপ্তাহে স্থানীয় উন্নত জাতের পেঁপের চারা রোপন করেন।
তিনি আরো জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে চারা রোপনের পূর্বে এক ফুট দৈর্ঘ্য ও এক ফুট প্রস্থ গর্ত করে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব সার ও নিম পাতা দিয়ে এক সপ্তাহ গর্তগুলো ভরে রাখেন। এরপর দেড় মাস বয়সের পেঁপে চারা রোপনের তিন মাস পর গাছে ফুল ধারণ করে এবং ধীরে ধীরে ফল ধরতে শুরু করে। চার মাস পর থেকে ফল সংগ্রহ শুরু হয় বলে জানান তিনি। পাকা ফল অধিক জনপ্রিয় হলেও বিপনণ ব্যবস্থার প্রতিকুলতা থাকায় কাঁচা ফল সবজি হিসেবে বিক্রি করেন। তিনি মাত্র ৮০ হাজার টাকা পেঁপে চাষে ব্যয় করে ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেন। একটি গাছ তিন থেকে চার বছর ফল দেয়, তাই তিনি আশাবাদি কোনোরুপ বৈরী পরিস্থিত তৈরি না হলে আরো ১৫ লক্ষাধিক টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ড. কৃষিবিদ দিপায়ন দাশ বলেন, পেঁপে চাষী মো. মনিরুজ্জামানকে সার্বক্ষনিক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করেন তিনি । বর্তমানে বাড়ীর আঙ্গিনা ও পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষের পাশাপাশি কৃষকরা স্বল্প পুঁজি খাটিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে স্থানীয় জাতের পেঁপে চাষে উৎসাহিত হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাছরুল মিল্লাত জানান, ফকিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় চাষীদের মধ্যে এখন পেঁপে চাষে আগ্রহ বেড়েছে। তিনি সহ উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ সহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা করে থাকেন বলে জানান।