ফকির শহিদুল ইসলাম(খুলনা): খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নে ৮২৩ কোটি এবং সড়ক মেরামত ও উন্নয়নে ৬০৮ কোটি টাকার দু’টি প্রকল্পের কাজ এপ্রিল মাসে শুরু করবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন। ৪ বছর মেয়াদী এ প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়ন হলে নগরবাসীর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ও চলাচলের যে ভোগান্তি তা লাঘব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) নব-নির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের নির্দেশনা অনুযায়ী ৮২৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করা হয়। এ প্রকল্পের মূল অংশে রয়েছে ৯টি প্রধান সড়কের ৬২ কিলোমিটার এলাকায় প্রাইমারি ড্রেন ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভেতরে প্রায় ১২৮ কিলোমিটার সেকেন্ডারি ড্রেন (৩ ফুটের কম)। প্রধান ড্রেনগুলোর মধ্যে মুজগুন্নী মহাসড়কের উভয় পাশে ফুটপাতসহ দুই পাশে ৮ কিলোমিটার ড্রেন, যশোর রোডের ডাকবাংলো মোড় থেকে নতুন রাস্তা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন, খানজাহান আলী রোডের পিটিআই মোড় থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার নতুন ড্রেন, একই সড়কের ফেরঘাট বাস টার্মিনাল থেকে ক্যাসেল সালাম হোটেল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার ড্রেন, আপার যশোর রোডের পিকচার প্যালেস মোড় থেকে ১ নম্বর কাস্টমস ঘাট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া ময়ূর নদীসহ ৮টি খাল খনন, পাড় বাঁধাই ও ময়ূর নদীর ওপর ৩টি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
অপরদিকে নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ৫১৩টি এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ৬০টিসহ মোট ৫৭৩টি সড়কের তালিকা তৈরি করা হয়। এর ব্যয় নির্ধারণ করে ৬০৮ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। এর মধ্যে মুজগুন্নী মহাসড়ক (সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে নতুন রাস্তা), জলিল স্মরণী (বয়রা কলেজ মোড় থেকে রায়েরমহল হয়ে সিটি বাইপাস), মজিদ স্মরণি (শিববাড়ি মোড় থেকে বাস টার্মিনাল), এম এ বারী সড়ক (গলামারী থেকে বাস টার্মিনাল), বিআইডিসি রোড, পুরাতন যশোর রোড (ডাকবাংলো মোড় থেকে কাস্টমঘাট) সহ গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক এই প্রকল্পে রয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৭৮ কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিং, ১৫১ দশমিক ৯২ কিলোমিটার সড়ক আরসিসি ঢালাই এবং ৩৩ কিলোমিটার সড়ক সিসি ঢালাই দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে কার্পেটিং সড়ক মেরামতে ২৩৮ কোটি, আরসিসি রাস্তা ৩০৩ কোটি এবং সিসি রাস্তার জন্য ৩৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। রাস্তা সংস্কার ছাড়াও ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০টি গুরুত্বপূর্ণ মোড় উন্নয়ন, দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কের ৫টি স্থানে সৌন্দর্যবর্ধন ও কিছু যানবাহন কেনার প্রস্তাব রয়েছে প্রকল্পে।
কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মশিউজ্জামান জানান, প্রকল্প দু’টির কাজ শুরু করার আগে ডিপিপি অনুমোদন ও প্রকল্প পরিচালক নিয়োগসহ আরও কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। তবে দুয়েক সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদিত ডিপিপি কর্পোরেশনে চলে আসবে। এরপর পিডি নিয়োগ শেষে মার্চের প্রথম সপ্তাহে টেন্ডার আহ্ববান করা হবে। সর্বপরি সকল প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাজ বাস্তবায়ন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।