মো. খোরশেদ আলম (জুয়েল): চোখকে যেমন বিশ্রাম দিতে হয়, মনকেও মাঝে মাঝে বিশ্রাম দিতে হয়। সে বিশ্রাম হতে পারে নানা উপায়ে। কেউ ঘুমিয়ে বিশ্রাম দেন কেউ, কেউ ভ্রমণে যেয়ে। মনকে যদি বিশ্রাম ও আনন্দ দুটোই দিতে চান, তবে ভ্রমণ কিংবা বেড়াতে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। এতে করে মন পরিতৃপ্ত হয়, কাজের স্বতস্ফূর্ততা বাড়ে। বিষয়টি খুব ভালোভাবেই অনুভব করেছে দেশের মৎস্য সেক্টরে স্বনামধন্য কোম্পানি ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘ফিসটেক হ্যাচারি লিমিটেড’ গত বৃহষ্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) হ্যাচারি কর্মীদের জন্য আয়োজন করেছিল বনভোজন বা পিকনিকের।
মানুষকে যেমন অনেক বড় বড় জিনিস দিয়েও সন্তুষ্ট করা যায়না, আবার ছোট ছোট অনেক জিনিস দিয়ে আনন্দে ভরিয়ে দেয়া যায় সেদিন সেটি নিজ চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। সারাদিনের কর্মক্লান্ত পরিশ্রমী মানুষগুলোর জন্য দরকার শুধু একটু ভালো ব্যবহার, উৎসাহ ও উদ্দীপনা। সম্ভবত সে কারণেই ফিসটেক হ্যাচারির কর্মীদের মাঝে এতটা আনন্দ দেখা গিয়েছিল সেদিন।
ফিসটেক হ্যাচারিটি মূলত ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার মাঝিয়াল গ্রামে। পিকনিকের উদ্দেশ্য সেখান থেকে শেরপুর জেলার গজনী রিসোর্ট। আগের দিন শুনলাম, ভোর ৭টা বাজে সেখান থেকে বাস ছেড়ে যাবে গজনীর উদ্দেশ্যে। বেড়াতে গিয়েছি কিন্তু এত সকালে উঠবো কীভাবে, সেটি নিয়ে ব্যাক্তিগতভাবে একটু চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের উৎসাহী কর্মীদের কি আর সে চিন্তা আছে? ’তারা নাকি কনকনে শীতের মধ্যেই ভোর ৫টায় উঠে গোসল সেরে রেডি’ জানালেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তারিক সরকার।
যাইহোক ঘুম থেকে উঠে দেখি, কারো কারো চোখে কালো, বেগুনী, নীল, ওয়াটার কালার চশমা। সবাই মোটামুটি নতুন জামা পড়েছে। মনে হচ্ছে, ঈদ লেগেছে তাদের মনে। তারিক ভাইয়ের মুখ শুনলাম, প্রতি বছর পিকনিকে যাওয়ার আগে কর্মীরা নতুন জামাকাপড় কিনে। তাদের কাছে নাকি এটাও ঈদ। যাইহোক যথাসময়ে আমরা রওনা দিলাম, শেরপুর গজনী রিসোর্টের উদ্দেশ্যে।
সকাল সাড়ে দশটার দিকে আমরা পৌঁছে গেলাম গজনীতে। সেখানে কর্মীদের জন্য আয়োজন করা হলো- ফুটবল খেলা, বস্তা দৌড় ও র্যাফেল ড্র প্রতিযোগিতা। এক পাশে চলছিল খেলা, ঠিক তার কাছাকাছি উন্মুক্ত জায়গাই চলছিল রান্নার আয়োজন। অনেকটা ছোটবেলার চড়ুইভাতি বা জোলাভাতির মতো। খেলাধুলা ও র্যাফেল ড্র’র পরে হলো পুরস্কার পর্ব। এসব করতে করতে এক সময় মধ্যাহ্নভোজের সময় চলে আসলো। সবাই খোলা ময়দানে একত্র বসে খাওয়ার তৃপ্তিই আলাদা। মধ্যাহ্নভোজের পর চললো পিকনিক স্পটের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি, ছবি তুলা ইত্যাদি।
বনভোজন সম্পর্কে ফিসটেক হ্যাচারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তারিক সরকার বলেন, ফিসটেক হচ্ছে একটি পরিবার। আমরা এখানকার ছোট-বড় সবাইকে পরিবারের সদস্যই মনে করি। কাজের পাশাপাশি পরিবারের সেই সদস্যদের খুশি রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
বনভোজন আয়োজনের সার্বিক দায়িত্ব ও তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন ফিসটেক হ্যাচারি লিমিটেড –এর ডেপুটি ম্যানেজার এটিএম তৌহিদুল ইসলাম, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. দেলোয়ার হোসেন ও সিনিয়র অফিসার মো. জহুরুল ইসলাম ছাড়াও কোম্পানির সকল কর্মীবৃন্দ।