নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পোলট্রি সেক্টর বর্তমানে নানা চড়াই-উৎড়াইয়ের মধ্যে যাচ্ছে। পোলট্রি ফিডে পাটের বস্তা ব্যবহারের জন্য সরকার আমাদের বাধ্য করছে। আজকেও একটি ফিডমিলে অভিযান চালিয়ে পাটের বস্তা ব্যবহার না করার জন্য মিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে আমার কাছে খবর এসেছে। কিন্তু পৃথিবীর কোথাও পোলট্রি কিংবা মাছের ব্যাগে পাটের ব্যবহার নেই। অনেক দেশ চেষ্টা করেছে কিন্তু সম্ভব হয়নি। কারণ, তাতে করে ফিড নস্ট হয়ে বিষাক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সরকার যেন শিল্পের কথা চিন্তা করে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেন সেটি আমরা আশা করবো।
কথাগুলো বলছিলেন পোলট্রি ও মৎস্য সেক্টরে দেশের স্বনামধন্য কোম্পানি প্যারাগন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) -এর সভাপতি মসিউর রহমান। “স্বপ্নীল আগামী, হবে রঙীন” স্লোগান নিয়ে পোলট্রি শিল্পে দেশের খ্যাতনামা কোম্পানি ‘প্যারাগন গ্রুপের ২৩ তম বার্ষিক পরিবেশক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনসন সিটি বসুন্ধরায় উক্ত সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, একটু সময় নিয়ে হলেও আমাদের সবসময় চেষ্টা থাকে পরিপূর্ণ গুণগত মানসম্পন্ন বাজারজাত করা। ফিড ও বাচ্চা সম্পর্কে আপনাদের যেসব পরামর্শ এসেছে সেগুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখবো এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো। এ সময় তিনি জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে আমরা লোহম্যান ব্রিডের বাচ্চা বাজারজাত করবো।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্যারাগন, উষা এবং চমক ব্র্যান্ডেপর পরিবেশক ও অতিথিদের উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মসিউর রহমান বলেন, আপনাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং আন্তরিকতার কারণেই এত বিশাল কর্মযজ্ঞ এত সফলভাবে বিগত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সম্পাদন করতে পারছি এবং যার ফলে সারাদেশে প্যারাগন গ্রুপ এর সুনাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কৃতিত্ব আপনার, আমার সকলের।
এছাড়াও মসিউর রহমান ২০১৮-১৯ সনের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য কোম্পানির গৃহীত পদক্ষেপ সম্মেলনে আগত পরিবেশকদের সামনে উপস্থাপন করেন এবং বাৎসরিক বিক্রয় সফলতার ওপর পরিবেশকদের হাতে ক্রেস্ট, অর্থ সম্মানি তুলে দেন এবং বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য এর আগে তিনি প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও সম্মেলনে আগত পরিবেশক এবং তাঁদের পরিবার পরিজনের সাথে স্টেজ থেকে নেমে আলাদা আলাদাভাবে কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে পরিচিত হন এবং ফটোসেশন করেন।
হাজারের ওপর অতিথি পরিবেশকগণ সকাল থেকেই সম্মেলনে আসতে শুরু করেন। পরিবেশকদের উপস্থিতিতে এক সময় অনুষ্ঠানটি মিলন মেলায় রূপ হয়। সকাল সাড়ে নয় টায় হাজী ফুল মিয়া সরকার কর্তৃক পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়।
সম্মেলনে প্যারাগন গ্রুপের সিওও (চীফ অপারেটিং অফিসার) সোহেল ইবনে সাত্তার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে আগত পরিবেশক ও তাদের পরিবার এবং আয়োজক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্যারাগন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, এই সম্মেলন শুধু ব্যবসায়িক আলোচনার আয়োজন নয়, বরং এক আনন্দঘন মিলনমেলার মাধ্যমে আপনাদের স্বপ্ন ও প্যারাগন গ্রুপের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আরেকটি নতুন বছরের সূচনা মাত্র।
সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্যারাগন গ্রুপের সম্মানিত পরিচালক ইয়াসমিন রহমান এবং মেহরান রহমান।
অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও আগত পরিবেশকদের জন্য র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস এবং নায়িকা পূর্ণিমা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রত্যেক ডিলারের জন্য বরাদ্দ ছিল আকর্ষণীয় গিফট হ্যাম্পার।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্যারাগন গ্রুপের চীফ কো-অর্ডিনেটর মনজুর এলাহী, অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মি. শ্যামল চক্রবর্তী, মার্কেটিং ম্যানেজার (পোলট্রি চিকস্ অ্যান্ড ফিডস) সমীরন দে ছাড়াও সেলস্ ও মার্কেটিং বিভাগের সর্বস্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে দেশের খ্যাতিসম্পন্ন নৃত্যশিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন এবং জনপ্রিয় শিল্পী কুদ্দুস বয়াতী গানের মাধ্যমে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন।