‘পোল্ট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৮’ পেলেন দেশের ১৯ সাংবাদিক

• জাতীয় দৈনিকের ৮ জন
• স্থানীয় দৈনিকের ১ জন
• টেলিভিশনের ৮ জন
• অনলাইনের ১ জন, এবং
• পোল্ট্রি ও কৃষি বিষয়ক ম্যাগাজিন/অনলাইন ১ জন

ঢাকা সংবাদাতা: সংবাদকর্মীদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত হলো পোল্ট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৮’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), তৃতীয়বারের মতো এ পুরস্কার প্রদান করে। ৫টি নিয়মিত ক্যাটাগরিতে মোট ৯ জন এবং আরও ১০ জন সংবাদ-প্রতিবেদককে রাইজিং পোল্ট্রি রিপোর্টার্স’ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

‘দৈনিক সংবাদপত্র’ ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পান দৈনিক জনকন্ঠের স্টাফ রিপোর্টার রহিম শেখ। দ্বিতীয় হন- দৈনিক ভোরের কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার মরিয়ম মনি সেঁজুতি, এবং তৃতীয় হন- দি নিউজ টুডে’র স্টাফ রিপোর্টার মো. মাজহারুল ইসলাম (মিচেল)। ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদন’ ক্যাটাগরিতে একমাত্র পুরস্কার লাভ করেন রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক নতুন প্রভাতের বার্তা সম্পাদক সোহেল মাহবুব।

‘টিভি ও রেডিও’ ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন- যমুনা টেলিভিশনের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট সুশান্ত সিনহা। দ্বিতীয় হন- এনটিভি’র সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মোহাম্মদ মাকসুদুল হাসান এবং তৃতীয় হন চ্যানেল-২৪ এর কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদক ফয়জুল সিদ্দিকী। বার্তা-সংস্থা/অন-লাইন ক্যাটাগরিতে একমাত্র পুরস্কার পান জাগোনিউজ২৪.কম এর স্টাফ রিপোর্টার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। পোল্ট্রি ও কৃষি বিষয়ক ম্যাগাজিন/অনলাইন’ ক্যাটাগরিতে একমাত্র পুরস্কার লাভ করেন এগ্রিনিউজ২৪.কম এর সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী মো. খোরশেদ আলম (জুয়েল)।

এছাড়াও রাইজিং পোল্ট্রি রিপোর্টার্স পুরস্কার অর্জন করেন- টেলিভিশন চ্যানেলের ৫জন ও জাতীয় দৈনিকের ৫জন রিপোর্টার। এঁরা হলেন- চ্যানেল আই এর রংপুর প্রতিনিধি মেরিনা লাভলী, একাত্তর টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মো. মেহেদী হাসান (ডলার), ডিবিসি নিউজের স্টাফ রিপোর্টার ইব্রাহিম পাঠান, মোহনা টিভি’র স্টাফ রিপোর্টার তানজিলা নিঝুম, মাই টিভি’র সিনিয়র রিপোর্টার সি.এম আমিনুল মজলিশ, দৈনিক কালের কন্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মো. শওকত আলী, দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার হামিদুর রহমান ভুঁইয়া (শিপন হাবীব), দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার শামসুল হক মোহাম্মদ মিরাজ (মিরাজ শামস), দৈনিক নয়াদিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার জিয়াউল হক মিজান এবং দি ইনডিপেন্ডেন্টের বিজনেস রিপোর্টার শরীফ আহমেদ।

প্রথম পুরস্কার বিজয়ীকে প্রাইজমানি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় বিজয়ীকে ৪০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ীকে ৩০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। তাছাড়া ঢাকার বাইরের দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ, সংবাদ সংস্থা/অনলাইন এবং পোল্ট্রি ও কৃষি ম্যাগাজিন/অনলাইনের পুরস্কার বিজয়ীদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা প্রাইজমানি এবং প্রত্যেক বিজয়ীকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। রাইজিং পোল্ট্রি রিপোর্টার্স’ পুরস্কার বিজয়ীদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকার প্রাইজমানি এবং সনদ প্রদান করা হয়।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক প্রথম আলো’র সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মুকুল, একুশে টেলিভিশনের এডিটর ইন চীফ মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল এবং যমুনা টেলিভিশনের বিজনেস এডিটর, সাজ্জাদ আলম খান তপু, ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (ফিআব) সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান, ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বিবি) সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) -এর সভাপতি মসিউর রহমান।

জুরি বোর্ডের পর্যবেক্ষণে আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বিগত কয়েক বছরে গণমাধ্যমে পোল্ট্রি বিষয়ক রিপোর্টের সংখ্যা বেড়েছে, একই সাথে বেড়েছে এ বিষয়ক প্রতিবেদনের মান। তবে নারী সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ বেশ কম। সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, পোল্ট্রি শিল্পের বিস্তার মূলত: গ্রামীণ এলাকাগুলোতে তাই ঢাকার বাইরে কর্মরত সংবাদকর্মীদের পোল্ট্রি রিপোর্টিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করা প্রয়োজন। মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী পোল্ট্রি শিল্পের সাথে জড়িয়ে আছে। তাই পোল্ট্রি শিল্পের বিষয়ে গণমাধ্যমের আগ্রহ থাকাটা স্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, রিপোর্টিং এর জন্য পোল্ট্রি একটি বিশেষায়িত শাখা হতে পারে।

মসিউর রহমান বলেন, বিপিআইসিসি’র মিডিয়া মনিটরিং রিপোর্ট অনুযায়ী গত এক বছরে জাতীয় দৈনিক, টিভি চ্যানেল ও অনলাইনে এক হাজারের অধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। পোল্ট্রি ইস্যুতে অনেকগুলো টিভি টকশো হয়েছে। ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতেও পোল্ট্রি বিষয়ক রিপোর্ট এবং আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, পোল্ট্রি এখন আপামর মানুষের জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষ সকলেরই খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে ডিম ও মুরগির মাংস।  ফ্রায়েড চিকেন, নাগেট, সসেজ, সালামি, ললিপপ প্রভৃতি খাবারগুলো এখন শুধু ঢাকার বাজারেই সীমাবদ্ধ নেই বরং সারাদেশেই পাওয়া যাচ্ছে। এহতেশাম বি. শাহজাহান বলেন, আগামীতে পোল্ট্রির আরও নতুন নতুন ভ্যালু-অ্যাডেড প্রোডাক্ট বাজারে আসবে। পুষ্টি চাহিদা পূরণ কিংবা রসনা তৃপ্তিই শুধু নয় পোল্ট্রি পণ্যকে অধিকতর নিরাপদ করা এবং রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কাজও করছেন উদ্যোক্তা ও খামারিরা। ডিম ও মুরগির মাংস বিষয়ক পুষ্টি সচেতনতামূলক তথ্য প্রচারে তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চান।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, প্রোটিনের বড় যোগানদাতা এখন পোল্ট্রি। শুধু দেশেই নয় সারা পৃথিবীজুড়েই ডিম ও মুরগির মাংসের চাহিদা বাড়ছে। ডিম নিয়ে বিস্তর গবেষণাও হচ্ছে। ভিটামিন এবং ওমেগা ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণ থেকে শুরু করে ওজন কমানো, টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এমনকি ক্যান্সারের ঔষধ হিসেবেও ডিমকে কাজ লাগানোর চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। স্বল্পতম সময়ে যেন রপ্তানী শুরু করা যায় সে চেষ্টাও করা হচ্ছে।

This post has already been read 3312 times!