নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘যেখানে ব্রয়লার মুরগির ভোক্তা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা সেখানে কমে যাচ্ছে। কারণ, আমরা এখনো ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। ভোক্তারা মনে করছেন মুরগির স্বাদ ভালো না, মান ভালো না। এজন্য ভোক্তার আস্থা অর্জন করাটা অত্যন্ত জরুরি। সরকার প্লাস্টিক বস্তার পরিবর্তে পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহারের জন্য বাধ্য করছে। আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি কিন্তু সরকার তাদের সিদ্ধান্তে অটল। আমার জানামতে, সব দেশই ফিডের জন্য প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করে। পাটের বস্তা ব্যবহার করলে ফিডের গুণগতমান ঠিক থাকবে না। কারণ, এতে বাতাস ঢুকে ফিড নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আশা করি, শিল্পের ক্ষতি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিবে না।’
কথাগুলো বলছিলেন, এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট –এর নির্বাহী পরিচালক সাইফুল আলম খান। শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গলফ ক্লাবে আয়োজিত দেশের পোলট্রি, মৎস্য ও গো খাদ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট (এআইটি) –এর বার্ষিক পরিবেশক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল আলম খান বলেন, সারাদেশকে আমরা টেকনিক্যাল সার্ভিসের আওতায় নিয়ে এসেছি। আমরা উঠান বৈঠিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে করে ডিলার এবং খামারিদের খুব কাছাকাছি আসতে পারবো। আমার জানামতে, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে ২৮-৩০ দিনের মধ্যে ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার উপযোগী হয়ে যায়। পৃথিবীর অন্য কোথাও এমনটি হয় বলে আমার জানা নেই।
তিনি বলেন, ডিলারদের যেকোনো পরামর্শকে আমরা যথাযথ সম্মান দেয়ার চেষ্টা করি। দীর্ঘ ৩১ বছরে আমরা অর্জন করেছি ডিলার এবং খামারিদের আন্তরিক ভালোবাসা। এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট –এর উদ্যোগেই শুরু হয় ফিআব (FIAB)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট –এর পরিচালক এবং সাবেক অতিরিক্ত সচিব আব্দুল কাদের মিয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। ফিড তৈরির জন্য ভুট্টা এবং গম আমদানিতে আমাদেরকে এখন আর আমদানির উপর নির্ভরশীল হতে হয় না। কারণ, দেশেই এখন প্রচুর ভুট্টা এবং গম চাষ হচ্ছে। অর্থনীতিতে আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। আর এক্ষেত্রে অন্যান্য শিল্পের মতো পোল্ট্রি শিল্প বিশেষ অবদান রাখছে। দেশের অর্থনীতিতে এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট –এর হেড অব মার্কেটিং মো. রেজাউল হাসেন বলেন, আমি কিছু স্বপ্ন ছড়াতে চাই। ২০১৯ সালের মধ্যে আমরা দেশের এক থেকে তিন নম্বর অবস্থানে থাকতে চাই। আমার বিশ্বাস সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পারবো। এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট হলো বাংলাদেশে একমাত্র আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর কোম্পানি এবং জগতে পাইওনিয়ার। মানের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় আপোষহীন। আমি আশা করি, ডিলার, খামারি, সেলস্ ফোর্স এবং সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় কোম্পানিকে একটি সম্মানজনক স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো।
এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট –এর প্রাক্তন প্রজেক্ট কন্ট্রোলার ড. মোহাম্মদ হোসেন বলেন। ছয়টা খাঁচা দিয়ে শুরু হয় আমাদের খামার। মাত্র ১৫টন ভুট্টা দিয়ে শুরু হয় আমাদের ফিডমিল। অনেক চড়াই উৎরাই পার করে এআইটি আজকে এই অবস্থানে এসেছে। বিবি৩০০ মুরগি আমরাই প্রথমেই আমদানি করি। এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট (এআইটি) একটি ইন্টিগ্রেটেড কোম্পানি।
পরিবেশকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বগুড়ার মাইশা এন্ড রাহাত এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল রাজ্জাক রতন, রংপুরের সাজ্জাদ ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী মো. সাজ্জাদ আহমেদ (সজল) এবং মো. ইমরান হোসেন (সিলেট)। পরিবেশকগণ তাদের বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধার কথা তুলে ধরেন এবং পরামর্শ প্রদান করেন।
কোম্পানির উর্ধ্বতনগণ পরিবেশকদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং তাদের সব ধরনের সমস্যা দুর করবেন করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
সবশেষে ১০ জন পরিবেশকদেরকে আকর্ষনীয় পুরস্কার দেয়া হয় এবং অনুষ্ঠানের সমপ্তি ঘোষনা করা হয়।