ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): বোরা ধানের ভরা মৌসুম। নন ইউরিয়া সারের চাহিদা কম। তারপরও চাহিদার তুলনায় দ্বিগুন নন ইউরিয়া সার আমদানী হয়েছে। এক বছর আগে সৌদি, কানাডা, বেলারুশ ও মরক্কো থেকে সার আমদানী করা হয়। বিএডিসি’র বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনার বয়রা ও রুজভেল্টজেটি বাফার গুদামে ঠাঁই নেই। বিসিক শিরোমনি,আফিল জুট মিল, বয়রা, সাত নাম্বার ঘাট, বন্ধগেট কলোনীর মাঠ এলাকায় খোলা আকাশের নীচে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন ইউরিয়া সার খোলা আকাশের নীচে রাখা হয়েছে। উল্লেখিত পরিমাণ সারের মূল্য প্রায় ১১৯ কোটি টাকা। আরও ২০ হাজার মেট্রিক টন সার নিয়ে তিনটি জাহাজ এ মাসে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে। খোলা আকাশের নীচে রাখায় সংশ্লিষ্ঠ এলাকার পরিবেশ বিরুপ প্রভাব পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, বোরো মৌসুমে চাহিদার প্রয়োজনে সৌদি থেকে ডিএপি, বেলারুশ ও কানাডা থেকে এমওপি এবং মরক্কো ও তিউনিশিয়া থেকে এক বছর আগে সার আমদানি করা হয়। বিএডিসি’র বাগেরহাট গুদামে ৪শ’ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার বিপরীতে সাড়ে ৪শ’ মেট্রিক টন, সাতক্ষীরা গুদামে ৪শ’ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার বিপরীতে সাড়ে ৫শ’ মেট্রিক টন, খুলনার বয়রা গুদামে আড়াই হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার বিপরীতে ৩ হাজার মেট্রিক টন এবং রুজভেল্টজেটি গুদামে ৩ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার বিপরীতে সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন নন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। সরকারি গুদামের বাহিরে শিরোমনি, বয়রা ও সাত নাম্বার ঘাট এলাকায় ৬৯ কোটি টাকার মূল্যের ৩০ হাজার মেট্রিক টন ড্যাপ, ২৬ কোটি টাকা মূল্যের ২০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি এবং ২৪ কোটি টাকা মূল্যের ১২ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি খোলা আকাশের নীচে রাখা হয়েছে।
বিএডিসি (সার) এর খুলনাস্থ যুগ্ম পরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, প্রয়োজনের তুলনায় দ্বিগুন সার মজুদ করা হয়। আপদকালীন সময় সংকট নিরাসনের জন্যই মজুদ বাড়ানো হয়। ট্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখার কারণে নন ইউরিয়া সারের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে না।
তার দেওয়া তথ্য মতে, বেলারুশ থেকে সী ডলফিন নামক জাহাজ ১০ হাজার মে.ট. এমওপি, মরক্কো থেকে ভেনটেজ রিক নামক জাহাজ ৭ হাজার মে.ট. টিএসপি এবং সৌদি থেকে ময়ূরী নারী নামক জাহাজ ৩ হাজার মে.ট. ডিএপি সার নিয়ে মংলা বন্দরে ভিড়েছে।
সার আমদানীকারক এসএসসিপিং এর কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন জানান, ২০১৮ সালের বিভিন্ন সময় এসব সার খুলনার সাত নাম্বার ঘাটে আনা হয়। আমদানিকারক এ প্রতিষ্ঠান গেল বছর ৫০ হাজার মে.ট. সার আমদানি করে। অপর আমদানিকারক নওয়াপাড়া ট্রেডার্সের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, খোলা আকাশের নীচে সার রেখে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। এক বস্তা সার নষ্ট হলে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। বিএডিসি’র গুদামে ঠাঁই না থাকায় তারা আমদানিকৃত সার বুঝে নিচ্ছে না। ফলে খোলা আকাশের নীচে মোংলা বন্দরের স্থান ভাড়া নিয়ে সার রাখা বাবদ মাসে ৪৫ লাখ টাকা ভাড়া দিতে হয়।