আবিদুর রহমান আবিদ : প্রকৃতি নানা রূপে নিজেকে সাজিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। প্রকৃতির এই নতুনত্বের খোঁজে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাভেলার্সরা প্রায়ই পাড়ি জমায় কাছের কিংবা দূরের কোন দর্শনীয় স্থানে। সাথে ক্লাস, প্রাকটিক্যাল আর এক্সামের একঘেয়েমীতা থেকে কিছুটা পরিত্রান তো আছেই। পবিপ্রবি ট্রাভেলার্সদের এবারের আয়োজনে সুন্দরবন। এটি তাদের ০৯ তম ট্যুর এবং তিন দিন, দুই রাত এই ভ্রমণ যাত্রা। সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি। গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত।
পবিপ্রবি ট্রাভেলার্সদের সুন্দরবন ভ্রমণ (পর্ব-০১)
সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ রয়েছে ভারতের মধ্যে। সুন্দরবন ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এর বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশ বস্তুত একই নিরবচ্ছিন্ন ভূমিখণ্ডের সন্নিহিত অংশ হলেও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে সূচিবদ্ধ হয়েছে; যথাক্রমে “সুন্দরবন” ও “সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান” নামে। সুন্দরবনকে জালের মত জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ক্ষুদ্রায়তন দ্বীপমালা। মোট বনভূমির ৩১.১ শতাংশ, অর্থাৎ ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা, খাঁড়ি, বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল।বনভূমিটি বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর কারনে।এছাড়াও নানান ধরণের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত সুন্দরবন ।জরিপ মোতাবেক সুন্দরবনে ১০৬ টি বাঘ ও প্রায় এক থেকে দেড় লাখ চিত্রা হরিণ রয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে সাতক্ষীরা অংশের সুন্দরবন সবচেয়ে বেশী সুন্দর।সেক্ষেত্রে আপনি সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন দেখা শুরু করতে পারেন।আমরা বিকাল ৫ টার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বরিশাল যাই।আমরা ৩০ জন ছিলাম যার মধ্যে ৫ জন মেয়ে, বাকী সবাই ছেলে এবং একজন শিক্ষক। সাথে ছিলো এশা আপু, খালেক ভাই, নাজমুল ভাই। আমরা বরিশাল থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের উদ্দেশ্যে হাওলাদার পরিবহন রাত ৯ টায় ছেড়ে যায়।বাসে আমরা ট্যুরের টিশার্ট দেই সবাইকে। টেকেরহাটে পৌছায় রাত ১২ টার দিকে, সেখানে আমরা শুভর বার্থডে ছেলিব্রেট করি ট্রাভেলসের পক্ষ থেকে। বাসটি শ্যামনগর পৌঁছে রাত ৩ টায় এবং শেষ স্টপেজ ছিলো শ্যামনগর আমরা ৩০ জন থাকায় বাসটি মুন্সিগঞ্জ নিয়ে যাই।
সাতক্ষীরা শহর থেকে শ্যামনগর ৬০ কিমি। আমাদের বোট আগেই ঠিক করা ছিল এবং পবিপ্রবি ট্রাভেলস এর প্রেসিডেন্ট আশিক আল ফয়সাল এক দিন আগে সেখানে পৌঁছে সুন্দরবনের পাস নেওয়ার জন্য। আমাদের বোটটি দ্বিতল বিশিষ্ট নিচে ৬টি কেবিন ছিল, একটি কমোড সহ বাথরুম, একটি সাধারণ বাথরুম,একটি বড় ধরনের রান্নাঘর এবং উপরে থাকার জন্য ডেকোরেশন করা। আমাদের সাথে মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের আবদুল্লাহ আল হাসান স্যার ছিলেন ট্যুর গাইড, যিনি এক দিন আগে মৎস্যবিজ্ঞান অনুযদের ক্যান্ট্রি ট্যুর থেকে ক্যাম্পাসে পৌছান। আমাদের বোট রাত ৪ টায় রওনা দেয়।
লেখক: শিক্ষার্থী,কৃষি অনুষদ,পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়