চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: চট্টগ্রাম মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৯৮ শতাংশ চাকরিরত। প্রতিষ্ঠালগ্ন (১৯৭৩ সনে) থেকে এ পর্যন্ত ১৮০০ জন ক্যাডেট গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করার পর ১৭৬৪ জন উত্তীর্ণ ক্যাডেট দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানে দক্ষতা ও সুনামের সাথে চাকরি করছেন। এই একাডেমি থেকে ৩২তম থেকে ৩৬তম ব্যাচের মোট ৩৭ জন গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।
বুধবার ( ৬ মার্চ) চট্টগ্রাম মেরিন ফিশারিজ একাডেমিতে ২০১৮ সালে পাশকৃত ৩৭তম ব্যাচের গ্রাজুয়েটদের সনদ ও মেধাভিত্তিক পুরষ্কার দেয়ার সময় এ তথ্য জানানা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন ফিশারিজ বিভাগ থেকে ৫ জন মহিলাসহ ৭০ জন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ শেষে প্যারেডে অংশ নেয়। এদের মধ্যে নটিক্যাল বিভাগের ২৯জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৮ জন এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগের ১৩ জন ক্যাডেট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গ্রাজুয়েশনলাভ করলো। মৎস্য প্রতিমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মাঝে সনদ ও পুরষ্কার হস্তান্তর করেন।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি একাডেমি থেকে পাশকৃত ক্যাডেটদের অনুকুলে নৌপরিবহন অধিদফতর কর্তৃক Continuous Discharge Cerficate (CDC) ইস্যুর ফলে সমুদ্রগামী বাণিজ্যক জাহাজে চাকরিলাভের পথ সুগম হওয়ায় ৩২ থেকে ৩৬তম ব্যাচের মোট ৮১ জন CDC প্রাপ্ত ক্যাডেট বাণিজ্যিক জাহাজের চাকরিতে যোগদান করেছেন। এই একাডেমির ক্যাডেটরা এখন Inter Services Selection Board (ISSB) পরীক্ষায় পাশ করে নৌবাহিনীর অফিসার পদেও যোগদান করতে পারছে। এছাড়াও এই একাডেমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির অধিভূক্ত হওয়ায় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ হতে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩৯তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ৪ বছরমেয়াদি বিএসসি (অনার্স) ইন নটিক্যাল, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন ফিশারিজ ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এর ফলে ক্যাডেটরা বিসিএস পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
প্রতিমন্ত্রী ক্যাডেটদের মাঝে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে জানান যে, এ একাডেমিকে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সমুদ্রসম্পদভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠানরূপে গড়ে তুলতে সরকার ইতোমধ্যে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে “মেরিন ফিশারিজ একাডেমির প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ও জোরদারকরণ” শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নের জন্য কম্পিউটার বেসড অত্যাধুনিক সিমুলেটর সংগ্রহের জন্যও একটি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, পর্যাপ্ত পরিমানে প্রাকৃতিক সম্পদের আধার বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের ‘তৃতীয় প্রতিবেশী’ হিসেবে আজ সর্বজনবিদিত। মৎস্যসম্পদ, আহরণ, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, জীববৈচিত্র্যরক্ষা ও পরিবেশ দূষণরোধে ক্যাডেটদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
পরে, মৎস্য প্রতিমন্ত্রী একাডেমিতে চট্টগ্রামের সংবাদকর্মীদের সাথে মন্ত্রণালয় এবং মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ব্যাপ্রে নানা বিষয়ে মতবিনিময় করেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নের ব্যাপারে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতাও কামনা করেন।
এর আগে তিনি মেরিন ফিশারিজ একাডেমি সরজমিনে পরিদর্শন করে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, যুগ্মসচিব (ব্লু-ইকোনমি) তৌফিকুল আরিফ, একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মাসুক হাসান আহমেদসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।