আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এন্টিবায়োটিক মুক্ত পোল্ট্রি মাংস এবং ডিম উৎপাদনে নিরলস কাজ করছে পোল্ট্রি খাত। এ লক্ষ্যে প্রচুর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটি রাতারাতি সম্ভব নয়, তবে ইতোমধ্যেই পোল্ট্রি শিল্পে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। এখন প্রচুর পরিমানে প্রো-বায়োটিক এবং প্রি-বায়োটিক আমদানি হচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায় এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমাতে আমরা কোমর বেঁধেই কাজ শুরু করেছে। প্রকৃতিগতভাবেই ডিম ও মুরগির মাংস অত্যন্ত নিরাপদ পুষ্টির উৎস। সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকতে হলে পোল্ট্রির বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন বিপিআইসিসি সভাপতি মসিউর রহমান। শুক্রবার আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো-২০১৯ এর দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় পোল্ট্রি শো’র ভ্যেনুতে অনুষ্ঠিত হয় পোল্ট্রি কুকিং কনটেস্ট, ডিম সেলফি, চিকেন সেলফি প্রতিযোগিতা এবং লাইভ কুকিং শো।
পোল্ট্রি কুকিং কনটেস্টে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ১০ জনকে পুরুস্কৃত করা হয়। প্রথম পুরস্কার ২০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরুস্কার ১৫ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১০ হাজার টাকা। বাকি সাত জনকে বিশেষ পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া চিকেন সেলফি কনটেস্ট ও ডিম সেলফি কনটেস্টের বিজয়ীদের মাঝেও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন- গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজেন সাবেক প্রফেসর ফাতিমা সুরাইয়া, বিশিষ্ট রন্ধন শিল্পী কল্পনা রহমান এবং আল্পনা হাবিব। লাইভ কুকিং শো পরিবেশন করেন দেশের খ্যাতিমান মাস্টার সেফ ডানিয়েল সি. গোমেজ।
পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ওয়াপসা বিবি’র সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, আমাদের দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। তারা অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। কেননা দামি খাবার থেকে তারা পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারেন না। বর্তমান সময়ে পোল্ট্রিই হচ্ছে গরীবের পুষ্টির অন্যতম উৎস। চিকিৎসকদের মতে গরু ও ছাগলসহ অন্যান্য পশুর লাল মাংস মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে সাদা মাংস হিসেবে পোল্ট্রি মুরগির মাংস সবচেয়ে নিরাপদ মাংস। দামেও সস্তা। তিনি বলেন, বুদ্ধি দীপ্ত এবং মেধাবী জাতি গড়তে হলে পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানের অতিথি অভিনেত্রী ও মডেল বিপাশা হায়াৎ বলেন, আগে আমি জানতাম না। কিছুটা সংশয় ছিল। পরে জেনেছি পোল্ট্রির মাংস এবং ডিম সম্পুর্ণ নিরাপদ। এখন আমি আমার সন্তানদের খেতে বলছি। আমি নিজেও খাচ্ছি। নানা সময় নানা ধরণের কথা শোনা গেলেও সেগুলোর ভিত্তি এবং যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই শিল্প দেশের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছে। সবাই মিলে সহযোগিতা দিয়ে পোল্ট্রি শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে।
প্রতিযোগিতা পর্বের আহবায়ক ওয়াপসা-বিবি’র সহ-প্রেসিডেন্ট ইয়াসমিন রহমান বলেন, আগামীতে দেশের জনসংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। তাদের পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান আসবে কোথা থেকে? আমি মনে করি পুষ্টির অন্যতম উৎস হতে পারে পোল্ট্রি মাংস ও ডিম। তাই এ শিল্পের যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।
সংস্থাটির অপর সহ-প্রেসিডেন্ট জাহেদুল ইসলাম বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশের দিকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এই উন্নতিকে টেকসই করতে হলে প্রয়োজন মোধাবী জাতি। যে জাতি যত মেধাবী সেই জাতি তত বেশি উন্নত। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে শারিরিক ও মানুষিক বিকাশ অত্যন্ত জরুরী। তাই প্রথাগত অভ্যাস অনুযায়ী শুধু ভাত দিয়ে সব ধরণের পুষ্টি চাহিদা পুরণ সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে পোল্ট্রি মাংস ও ডিমের ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই পোল্ট্রি মাংস ও ডিম রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো। আামী কাল শনিবার সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে তিন দিন ব্যাপী এই শো শেষ হবে। ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এই শো এর আয়োজন করেছে।