ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): বাণিজ্যিকভাবে বাগেরহাটের ফকিরহাটে গড়ে তোলা হয়েছে মরুর দুম্বার খামার। কৃত্রিমভাবে মরুভূমি তৈরি করে লালন-পালন করা হচ্ছে এসব দুম্বা। ফুয়াদ হাসান নামের এক যুবক এই খামার গড়ে তুলেছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, বাংলাদেশের পরিবেশ দুম্বা পালন উপযোগী। দুম্বা সাধারণত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে বেশি পাওয়া যায়। শুরুতে আট্টাকি গ্রামে দুই বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় এই দুম্বার খামার। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ফুয়াদ কয়েক মাস আগে খামারটি গড়ে তোলেন তার্কি জাতের পাঁচটি দুম্বা দিয়ে। তিন সপ্তাহ আগে ওই খামারে একটি মাদি দুম্বা বাচ্চা দিয়েছে। আরো দুটি দুম্বা অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাচ্চা দেবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে বালু ফেলে অনেকটা মরু পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন রঙের প্রাপ্তবয়স্ক পাঁচটি দুম্বা বালুর ওপর দিয়ে চড়ে বেড়াচ্ছে। সঙ্গে সাদা রঙের দুম্বার একটি বাচ্চা ঘুরে বেড়াচ্ছে। দুম্বার পাশাপাশি ফুয়াদ সেখানে গরু ও ছাগল লালন-পালন করেন। জন্মের পর তিন থেকে চার বছরে দুম্বা পরিণত হয়। তখন একটি দুম্বার ওজন হয় ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত। পূর্ণবয়স্ক একটি দুম্বা আড়াই থেকে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করা যায়। দুম্বা সাধারণত কাঁঠালপাতা, বুটের ভুসি, গম, ভুট্টা, বাদাম, ছোলা এবং ঘাস খেয়ে বেঁচে থাকে।
ফুয়াদ জানান, ভারতের রাজস্থান থেকে তিনি পাঁচটি দুম্বা আমদানি করেন। আগামীতে আরো বড় পরিসরে খামার তৈরি করতে চান। আর খামারে উৎপাদিত দুম্বা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। এছাড়া খামারে ভারতের রাজস্থানের হরিয়ানা, তোতা, বুজরি সিরহি, ভিটল ও জিবলা জাতের ২৬টি ছাগল এবং অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান জাতের ৯টি গরু আছে। ফুয়াদ ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে মার্কেটিং বিষয়ে বিবিএ করেছেন। তিনি এই খামারের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে চান।
ফকিরহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ডা. পুষ্পেন কুমার সিকদার জানান, দুম্বার খামার করতে কোনো ঝুঁকি নেই। বাংলাদেশের পরিবেশের সঙ্গে দুম্বা ভালোভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।