চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, একজনের জন্য সুখবর ও অন্য জনের জন্য দুঃসংবাদ হতে পারে। তবে বৈজ্ঞানিক যুক্তি ও তথ্য নির্ভর না হলে সেটা সাধারণ জনগনের জন্য সুখকর না হয়ে হুমকি হতে পারে। তাই সংবাদ পরিবেশন কালে সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞ ও বৈজ্ঞানিকদের মতামত যুক্ত করে সংবাদ পরিবেশন করলে বিভ্রান্তিকর অবস্থা থেকে জাতি মুক্ত হতে পারে। সুতরাং নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনকে সত্যিকারের সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হলে, গণমাধ্যম কর্মীদের বিজ্ঞানসম্মত ও সঠিক তথ্য তুলে ধরা প্রয়োজন। কর্পোরেট ব্যবসা প্রসারের কারণে অনেকে নিজেরা গণমাধ্যম খুলে একটি তথ্য ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রচার করছে। ফলে জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছে। আবার গণমাধ্যমের সাথে বৈজ্ঞানিক ও বিশেষজ্ঞদের সঠিক ও কার্যকর যোগাযোগ না থাকায় তাদেরকেও প্রকৃত তথ্য পেতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য আন্দোলন যেহেতু একটি সার্বজনীন বিষয়। সেজন্য দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে সকলের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত না হলে পুষ্টির চাহিদা পুরণ সম্ভব নয়। আর পুষ্টির চাহিদা পুরণ সম্ভব না হলে মেধাবী জাতি গঠনও সম্ভব নয়। তাই মেধাবী ও সুস্থ-সবল, কর্মক্ষম জাতি গঠনে নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চিয়তা অপিরিহার্য। এজন্য সকল মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে। গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। সোমবার (১ এপ্রিল)চট্টগ্রামে ক্যাব’র পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্পের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মিডিয়া ডায়লগে বক্তাগণ এসব কথা বলেন।
সভায় বক্তাগণ আরো বলেন, গণমাধ্যমগুলির মাঠ পর্যায় থেকে সঠিক ও বস্তু নির্ভর তথ্য পেতে অনেক সময় বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। যেকারণে নিরাপদ খাদ্য নিয়ে সমন্বিতভাবে সরকারি-বেসরকারী পক্ষ থেকে তখ্য পাওয়া কঠিন হচ্ছে। আর গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এক্ষেত্রে নতুন নতুন গবেষণা উদ্ভাবন করলেও মাঠ পর্যায়ে তার সংযোগ স্থাপন যথাযথ ভাবে হচ্ছে না। বিচ্ছিন্ন ও খন্ডিতভাবে তথ্য উপস্থাপনের কারণে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা একন্তভাবে কাম্য। এজন্য নিরাপদ খাদ্য, বিশেষ করে পোল্ট্রি সাইন্সের এই ক্ষেত্রগুলিতে মিডিয়া ফেলোশীপ চালু করা যেতে পারে। যাতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও মাঠ পর্যায়ের তথ্য তুলে আনা সম্ভব হয়।
বক্তারা বলেন, দেশের জনগোষ্ঠির একটি বড় অংশ সচেতন নয়। আর জন্য সবার কাছে সকল তথ্য সমানভাবে পরিবেশিত হচ্ছে না। সেকারণে গণমাধ্যমকর্মীরা তৃণমূল জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিয়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। এছাড়াও সংবাদ পরিবেশনে অনেক সময় বিশেষজ্ঞদের মতামততের নামে এমন কিছু লোকজনের মতামত যুক্ত করা হয়, যারা আসলে এ বিষয়ের সাথে সরাসরি যুক্ত নয়। ফলে জনগণ প্রকৃত সত্য তথ্য জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অনুষ্ঠানের কারিগরি সহযোগিতায় ছিলেন, ইউকেএইড এবং বৃটিশ কাউন্সিল। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম –এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. ফরহাদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিভাসু’র পোল্ট্রি রিচার্স ও ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক জসিম ও সিভয়েস২৪ডটকমের সম্পাদক এম নাসিরুল হক।
ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অন্যন্যোর মধ্যে অংশগ্রহণ করেন, দেশ টিভির ব্যুরো প্রধান আলমগীর সবুজ, ডেইলী নিউএজ’র ব্যুারো প্রধান ফেরদৌস আরা, দৈনিক পূর্বকোণের ইফতেখারুল ইসলাম, দৈনিক প্রিয়চট্টগ্রামের নির্বাহী সম্পাদক শাউন ইমতিয়াজ, বাংলানিউজ২৪ডটকমের আল রমহান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের রেজা মুজাম্মেল, দৈনিক শেয়ার বিজের সাইয়েদ সবুজ, সমকালের শৈবাল আচার্য্য প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় নিরাপদ পোল্ট্রি মুরগী নিশ্চিতে করণীয় নিয়ে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা করেন, পাঁচলাইশ থানা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিয়া খাতুন ও ক্যাব আইবিপি অন পোল্ট্রি সেক্টর সুশাসন প্রকল্প নিয়ে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা করেন, ক্যাব চট্টগ্রামের মাঠ সমন্বয়কারী জগদিশ চন্দ্র রয়।