চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: পোল্ট্রি মুরগীর নিরাপদ খাদ্য, এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধসহ প্রাণিজ সম্পদের উন্নয়ন ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সরকারি কর্মসুচিতে দেশের ১৬ কোটি ভোক্তার প্রতিনিধি হিসাবে ক্যাব প্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, নাগরিক নজরদারি দেশের সরকারি সেবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সুশাসন ও সেবার মান উন্নয়নে মাইল ফলক হয়ে থাকবে। কারণ, এক সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি নিরবে এবং এককভাবে কাজ করতো। আর এসমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজে জনগণের কার্যকর সম্পৃক্তার অভাব ছিলো। অন্যদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সব সময় ব্যবসায়ী, কৃষক ও উৎপাদকদের সাথে নিয়ে কাজ করলেও ভোক্তা প্রতিনিধিদের নিয়ে কাজ করতে তেমন অভ্যস্ত ছিলো না।
কিন্তু চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস তার ব্যতিক্রম। এখানে তারা সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ভোক্তাদের প্রতিনিধি হিসাবে ক্যাব ও সাংবাদিকদের সম্পৃক্ত করে অনেকগুলি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। যা দেশের অন্যান্য সরকারি দপ্তরগুলির জন্য অনুকণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষ করে জেলা পর্যায়ে মাসিক অ্যাডভোকেসী সভা করে কার্যক্রম পর্যালোচনা। তৃণমূল পর্যায়ে ক্যাবের সাথে যৌথ মনিটরিং, খামারী, খাদ্য, ওষুধ ও খুচরা মুরগি বিক্রেতাদের কার্যক্রম পরিদর্শনসহ নানা কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুকরনীয়।
সোমবার (১ এপ্রিল) নগরীর খুলসীতে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ক্যাব’র পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্পের উদ্যোগে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সাথে অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেসী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক ডা. ফরহাদ হোসেন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, পোল্ট্রি মুরগি প্রাণিজ আমিষের অন্যতম যোগানদাতা হলেও পোল্ট্রি ফিড ও অ্যান্টিবায়েটিকের অপব্যবহার সম্পর্কে নানা প্রকার নেতিবাচক সংবাদের ভিড়ে এ পুষ্টির যোগান অনেকটা বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। নেতিবাচক সংবাদগুলির অবৈজ্ঞানিক ও তথ্যবিভ্রাট ছাড়া কিছু নয়। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেও পুষ্টির চাহিদায় ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। আর সেখানে পোল্ট্রি মুরগি, ডিম ও দুধ কম খরচে এ ঘাটতি পুরণে সহায়ক হবে। পুষ্টির ঘাটতি হলে মেধাবী ও কর্মক্ষম জাতি গঠন বাধাগ্রস্থ হবে। অন্যদিকে সুপার শপ গুলিতে ড্রেসড (প্রক্রিয়াজাতকৃত) মুরগিগুলো মানসম্মত জবাইখানায় প্রক্রিয়াজাত হচ্ছে কিনা, সেখানে নিরাপদ খাদ্যের যাবতীয় অনুসরনীয় বিধানগুলি পুরোপুরি মেনে চলা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে সুপারশপ ও মুরগি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পরিবেশিত মুরগির মান সরেজমিনে তদারকি করা এবং মানহীন খাদ্য-পণ্য বাজারজাত করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়।
ইউকে এইড, বৃটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় প্রকাশ প্রকল্পের কারিগরী সহযোগিতায় পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম, আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক জসিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, থানা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিয়া আকতার, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব পাঁচলাইশের সেলিম জাহ্ঙ্গাীর, আগোরা সুপার শপের আবদুল্লাহ আল মামুন, খুলসী মার্টের আবু সায়েম, মিনা বাজারের নুরুল্লাহ, বাসকেট’র আরিফুর রহমান, স্বপ্নের ওয়াদুদ আফসার, কাজী ফুডস’র সাইফুল ইসলাম ও ক্যাব চট্টগ্রামের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর জগদিস চন্দ্র রয় প্রমুখ।