ঢাকা সংবাদদাতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়াধীন মৎস্য উপখাতের ২২টি চলমান প্রকল্পের জুলাই-মার্চ মাস পর্যন্ত ৯ মাসের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কাজের নিম্নমান, টেন্ডারের শর্তানুযায়ী ঠিকাদারদের নির্ধারিত সময়ে কাজ সমাপ্তিতে ব্যর্থতা, বর্ধিত সময় দানের পরেও ঠিকাদারদের নিকট থেকে কাজ আদায় করতে না পারা এবং প্রকল্পের কাজে অস্বচ্ছতার ব্যাপারে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার নিহ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রতিমন্ত্রী চুক্তি মোতাবেক ১০০% কাজ আদায়ের স্বার্থে ঠিকাদারদের অগ্রিম বিল প্রদান বন্ধসহ টেন্ডারের চুক্তিতে তিনবার কাজের ব্যর্থতার দায়ে ঠিকারদারদের কালো তালিকাভুক্তির শর্তযুক্ত করতে প্রকল্প পরিচালকদের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, দুর্বল ও গৎবাঁধা চুক্তির কারণে প্রায়ই লিজদানকৃত সরকারি সম্পত্তি বেহাত হয়ে যায় উল্লেখ করে বলেন, তা আর হতে দেয়া যাবে না।
তিনি অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের কার্যক্রমের অগ্রগতির তুলনায় এই মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের কাজের নিম্নগতি এবং প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত দেয়ার বিরুদ্ধেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয় যখন প্রকল্পের বাড়তি অর্থবরাদ্দের জন্য মরিয়া হয়ে থাকে, তখন আমাদের প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থফেরত যাওয়াটা মন্ত্রণালয়ের জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর।
উল্লেখ্য যে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মৎস্য উপখাতের ২২টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৪১৩ কোটি ৮ লাখটাকার মধ্যে ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরে ২৬টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৪০৭ কোটি ৩ লাখ টাকার মধ্যে একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল মোট প্রায় ১৭৮ লাখ টাকা। ২২টি প্রকল্পের মধ্যে মৎস্য অধিদপ্তর ১৪টি, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ৫টি, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন ২টি ও ই-সেবাখাতে ১টি প্রকল্প বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
বলা বাহুল্য যে, মন্ত্রণালয়ের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপখাতের মোট ৪৫টি প্রকল্পের জন্য চলতি অর্থবছরে সর্বমোট বরাদ্দ আছে ৭৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং উভয়খাতে এই ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে মোট ৩৫১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এসময়ে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে শতকরা প্রায় ৫৩ ভাগ। কিন্তু বিগত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সর্বমোট ৪৮টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৮২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকার মধ্যে একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৪০০ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
মৎস্য উপখাতের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির এ রিভিউ সভায় বিভিন্ন দফতরের ডিজি, প্রকল্পের পরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।