শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

মহিষে অবহেলা বাংলাদেশ : কাজে লাগাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলোর দুধের মার্কেট শেয়ারের বৃহৎ অংশ যেখানে মহিষের সেখানে আমরা কেবল গরুর দিকেই তাকিয়ে আছি। বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক দুগ্ধ উৎপাদন ও রপ্তানিকারক দেশ ভারতের ৫৬% এবং নেপাল ও পাকিস্তানের যথাক্রমে ৭০% ও ৬৩% মার্কেট-মিল্ক আসে মহিষ থেকে। কিন্তু বাংলাদেশের মার্কেট-মিল্কের মাত্র ৪ শতাংশ আসে মহিষ থেকে। এজন্য আমাদের অবহেলা এবং ভ্রান্ত ধারনা দুটোই দায়ী।

অন্যদিকে ‍দুধের প্রাপ্যতা থেকেও আমরা পিছিয়ে আছি। একজন মানুষের দৈনিক যেখানে ২৫০ মিলি লিটার দুধের প্রয়োজন সেখানে বাংলাদেশের মানুষের দৈনিক দুধের প্রাপ্যতা হচ্ছে মাত্র ১৫৮ মিলি.।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) কেআইবি মিলনায়তনে আয়োজিত “Buffalo Development for the Production of safe Food and Sustainable Development” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল ব্রিডিং এন্ড জেনেটিক বিভাগের অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক এবং প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) এর মহা ব্যবস্থাপক ড. শরীফ আহমেদ চৌধুরী ও কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রকল্পের পিডি বেলাল হোসেন। বক্তারা বলেন, গরুর দুধের চেয়ে মহিষের দুধ ও গোস্ত যেমন বেশি সুস্বাদু তেমনই এতে কোলেস্টেরলের মাত্রাও কম থাকে।

তাই ব্যাপকভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মহিষের উৎপাদন করে দেশ-জাতির আমিষের চাহিদা পূরণ করছে সেসব দেশ। তাঁরা জানান, আমাদের দেশে এক সময় মহিষের সংখ্যা ৪২ লাখের মতো থাকলেও এখন তা মাত্র ছয় লাখে ঠেকেছে। তারা সরকারি-বেসরকারিপর্যায়ে মহিষের জাত উন্নয়ন, ব্যাপক উৎপাদন ও পরিচর্যার ব্যাপারে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর জোর দেন। প্রতিমন্ত্রী মহিষের সংখ্যা হ্রাস এবং বিনা চিকিৎসায় এদের ব্যাপক মড়কের ব্যাপারে ভেটেরিনারিয়ানদের সক্রিয়তা এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতরসহ বেসরকারি খামারি ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।

মহিষের দুধ ও গোস্তের খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের রুচির ক্ষেত্রে যেমন মানসিকতার পরিবর্তন দরকার তেমনই বাজারে মহিষের গোস্তকে গরুর গোস্ত বলে চালানোর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নেয়ারও আহবান জানান। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক হীরেশ রঞ্জন ভৌমিকের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াসি উদ্দিন, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নাথুরাম সরকার, সেনাবাহিনীর কর্নেল আব্দুল বাকী, মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

This post has already been read 5509 times!

Check Also

মহিষের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার

সাভার সংবাদদাতা: মহিষের উৎপাদন বাড়ানো আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, একসময় …