১৪ জুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পোল্ট্রি ফিডে ব্যবহৃত কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির আশংকায় মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম জেলার প্রান্তিক খামারিরা। সোমবার (২৪ জুন) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে তারা পোল্ট্রি ফিডের দাম কমানো এবং সারাবছর জুড়ে ডিম ও মুরগির মাংসের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারিদের রক্ষার দাবি জানান।
খামারি মো. তৈয়ব তাহের বলেন, পোল্ট্রি ফিড কিনতেই ৬৫-৭০ শতাংশ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। পণ্যের নায্য দামও তারা পাচ্ছেন না। মাত্র ৮৫-৯০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে যেখানে উৎপাদন খরচ প্রায় ১১৫-১২০ টাকা। ফলে অধিকাংশ প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারি এখন দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে যদি ফিডের দাম আরো একধাপ বাড়ে তবে এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন তারা।
খামারি রেজাউল করিম আনসার বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট পোল্ট্রি খামারিদের প্রত্যাশা পূরণ করেনি। বাজেট ঘোষণার আগে অর্থমন্ত্রী পোল্ট্রি বীমার আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। বিগত কয়েক বছর থেকে তারা ফিডের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন কিন্তু ফিডের কাঁচামালের ওপর শুল্ক ও করের বোঝা বেড়েই চলেছে।
খামারি তানজিব জাওয়াদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের কাঁচামাল আমদানিতে ৫ শতাংশ হারে আগাম কর ধার্য্য করা হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রেও ‘উৎস আয়কর’ কাটার নিয়ম করা হয়েছে। এর ফলে ফিডের দাম আরও বাড়বে বলে তারা আশংকা করছেন। খামারি এ এস এম মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রান্তিক খামারিদের ঋণ দিতে চায় না। ফলে স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী ও এনজিওদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিতে হয়। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরাই দেশের ৮০ ভাগ ডিম ও মুরগির মাংস উৎপাদন করে।
তাই পোল্ট্রি খামারিদের দিকে নজর না দিলে ডিম ও মাংসের যোগানদাতা সবচেয়ে বড় এ খাতটি ধ্বংসের মুখে পড়বে। তাই পোল্ট্রি’র ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক ও কর প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। প্রায় পাঁচশত খামারী এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। ‘কম দামে ফিড চাই’, ‘ডিম ও মুরগির ন্যায্য দাম চাই’, ‘সহজ শর্তে ঋণ চাই’, ‘ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য সহায়তা চাই’, ‘পোল্ট্রি বীমা চাই’, ‘পোল্ট্রি-বান্ধব বাজেট চাই’, প্রভৃতি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারিরা।