কৃষিবিদ ড. এমএ মজিদ মন্ডল : লটকন বা লটকা (Burmese grape) এর বৈজ্ঞানিক নাম ব্যাকারিয়া স্যাপাডিয়া (Baccaurea sapida) যেটি ইউফোরবিয়া (Euphorbiacea) পরিবারের সদস্য। এ ফল অম্লমধুর স্বাদে ভরা মুখরোচক ফল হিসেবে লটকন সবার নিকট সমাদৃত।
উদ্ভিদতত্ত্ব: লটকন একটি মাঝারি আকারের বৃক্ষ। এটি সব ধরনের আবহাওায় জন্মে; তবে উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়া ও আংশিক ছায়াযুক্ত স্থানে ভালো হয়। ফল গোলাকার লম্বা ছড়ায় কান্ড ও ডালে ঝুলে থাকে এবং বীজের চারপার্শ্বে পাতলা স্তরে অম্লমধুর শাঁস থাকে। শীতের শেষে ফুল আসে ও জুলাই-আগষ্ট মাসে পাকে।
পুষ্টি উপাদান: লটকনের প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য শাঁসে ১.৪২ ভাগ আমিষ, ০.৪৫ ভাগ স্নেহ, ০.৬৪ ভাগ আঁশ, ০.৯ ভাগ খনিজ, ০.০৩ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১, ০.৩ মি.গ্রা. লৌহ ও ৯১ কিলোক্যালোরি খাদ্য শক্তি থাকে।
যে জন্য চাষ করা যায়:
১. বাংলাদেশের প্রচলিত ফল অনেক ফলের চেয়ে ফলন ও বাজার মুল্য বেশি। তাই এ ফল চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
২. পতিত, অউর্বর, অনাবাদি যে কোন জমিতে জন্মানো যায়।
৩. রৌদ্র থেকে কিছু ছায়াযুক্ত স্থানে জন্মে; তাই বাড়ির আশেপাশ্বে, বাগান, বন-জঙ্গল, পাহাড়-পর্বত বিভিন্ন স্থানে সহজে জন্মানো যায়।
৪. তেমন কোন সার দেয়ার দরকার হয় না (তবে বাণিজ্যিক ভাবেচাষ করলে একটি ১০-১৫ বছর বয়সের গাছে প্রতি বছর বর্ষার আগে দুপুর বেলা যতটুকু স্থানে ছায়া পড়ে ততটুকু স্থানের মাটি কুপিয়ে আলগা করে ২০-২৫ কেজি গোবর, ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০০ গ্রাম টি.এস.পি ও ২০০ গ্রাম পটাস সার পয়োগ করতে হবে)।
৫. পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল হওয়ায় শরীরের জন্য উপকারী।
লেখক: ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান), রাজশাহী বিভাগীয় আঞ্চলিক কেন্দ্র, সিরাজগঞ্জ।